ইউক্রেন যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে লড়াই করার অভিজ্ঞতা বেশ ভয়ঙ্কর বলে বর্ণনা করেছে বেশ কয়েকজন রুশ যোদ্ধা। রাশিয়ার মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীদের বরাত দিয়ে বিবিসি কথা বলেছে এমনই এক রুশ যোদ্ধার সাথে; যিনি বলেছেন, মরতে বা মারতে আমি আর ইউক্রেনে ফেরত যেতে চাই না। সেখানে আর যুদ্ধও করতে চাই না।
এই কথা যিনি বলেছেন সেই সের্গেইয়ের (ছদ্মনাম) রয়েছে পাঁচ সপ্তাহ সম্মুখ সমরে লড়ার অভিজ্ঞতা। তিনি এখন আছেন রাশিয়ায়। সেই সাথে, ইউক্রেনে সম্মুখ সমরে যুদ্ধ এড়ানোর জন্য নিচ্ছেন আইনি পরামর্শ। কেবল এই বক্তাই নন, ইউক্রেনে আবারও যুদ্ধ করতে চান না একশোর বেশি রুশ যোদ্ধা, যারা আইনি পরামর্শের মাধ্যমে সুরক্ষা খুঁজছেন।
সের্গেই জানান, ইউক্রেন যুদ্ধের অভিজ্ঞতা তাকে অসুস্থ করে ফেলেছে। তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম রুশ সেনাবাহিনী আছে যারা বিশ্বের সেরা। কিন্তু প্রাথমিকভাবে যেসব দরকার, যেমন নাইট ভিশন যন্ত্র, সেসব ছাড়াই লড়াই করতে হয়েছে আমাদের। অনেকটা অন্ধ বিড়ালছানার মতো ছিলাম। আমাদের সেনাবাহিনী আমাকে অবাক করেছে, হতাশও করেছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত করার জন্য যথেষ্ট খরচ করা হয়নি। জানি না, কেন এমনটি হলো।
সের্গেই জানান, গত জানুয়ারিতে তাকে ইউক্রেন সীমান্তে পাঠানোর সময় বলা হয়েছিল কেবল সামরিক ড্রিলের ব্যাপারে। এর মাসখানেক পর, ২৪ ফেব্রুয়ারি, তার ইউনিটকে সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেনে প্রবেশের নির্দেশ দেয়া হয়। আর দেশটিতে প্রবেশ করেই আক্রমণের মুখে পড়ে যায় তার ইউনিট। সেদিন সন্ধ্যায় এক পরিত্যাক্ত খামারে আশ্রয় নিয়ে তারা উপলব্ধি করতে পারেন, যুদ্ধে জড়িয়ে গেছেন তারা। সের্গেই বলেন, অবাক হয়ে ভেবেছি সত্যিই এসব ঘটছে নাকি আমার সাথে! সেই রাতে আমাদের ওপর মর্টারের হামলা চালানো হয়। রাত শেষ হবার দেখি, ৫০ জনের ইউনিটের ১০ জন মারা গেছেন, আর আহত আরও ১০ জন।
আরও একটি ঘটনার কথা বলেছেন সের্গেই, যেখানে তার কয়েকজন কমান্ডারকে জ্বলন্ত একটি গাড়ি থেকে উদ্ধার করতে হয়েছিল। তিনি বলেন, রকেট লঞ্চার বা সেরকম কোনোকিছুর হামলা হয়েছিল। রুশ সৈন্যরা ভেতরে থাকা অবস্থায়ই গাড়িতে আগুন ধরে যায়। গুলি চলছিল তখনও, তবে আমাদের সেখানে ছুটে যেতে হয়েছিল। সম্ভাব্য সবাইকে উদ্ধার করেছি। এমন পরিস্থিতিতে আর ফিরতে চাই না।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন থেকে রুশ বাহিনীকে হটাতে দীর্ঘ সময় লাগবে, ন্যাটোর সতর্কতা
/এম ই
Leave a reply