Site icon Jamuna Television

শুভ জন্মদিন লাকী আখন্দ

লাকী আখন্দ (১৯৫৬–২০১৭)

যিনি দিয়ে গেছেন নীল মনিহার, তার গীতিতে কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে। নীলিমায় দুটি চোখ ভাসিয়ে দিয়ে কতজনই না আবার পথ চেয়ে থেকেছেন প্রিয় মানুষটির জন্য। আবার এলো যে সন্ধ্যা শুনে যতবারই সন্ধ্যা এসেছে দুজনে মিলে ঘুরে এসেছেন অজানাতে। ঠিকানাহীন অজানায় ঘুরে বেড়ানো সেই ফেরারী পাখির নিভৃতচারী সৃষ্টির কারিগর যিনি, তিনি লাকী আখন্দ। আজ এই বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পীর ৬৫তম জন্মদিন।

বাংলা গানের কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক লাকী আখন্দ। তিনি সৃষ্টি করেছেন বহু নন্দিত গান। সেসব গান দিয়ে জয় করেছেন কালের সীমানা। যিনি উপহার দিয়েছেন ‘আগে যদি জানতাম’, ‘আমায় ডেকোনা’, আবার এলো যে সন্ধ্যার মতো কালজয়ী সব গান।

তার সময়ে তিনি ছিলেন অন্যদের চেয়ে আলাদা। আত্মপ্রচারে তিনি কখনও শ্রোতে গা ভাসাননি। তিনি গেয়েছেন আপনমনে। গান করেছেন, সুর করেছেন, গানের সঙ্গে বেধেছেন প্রাণ। আর সেই বন্ধনের জোরেই কয়েক প্রজন্মের কাছে সঙ্গীতাঙ্গনের প্রিয় মানুষে পরিণত হয়েছেন লাকী আখন্দ।

১৯৫৬ সালের ৭ জুন ঢাকার পাতলা খান লেনে জন্মগ্রহণ করেন লাকী। মাত্র ৫ বছর বয়সেই সঙ্গীতে লাকীর হাতেখড়ি হয় তার বাবার কাছ থেকে। ১৯৬৩-৬৭ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন এবং রেডিওতে শিশুশিল্পী হিসেবে সঙ্গীত বিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন অসংখ্যবার। এছাড়া মাত্র ১৪ বছর বয়সেই এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার এবং ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করেন লাকী আখন্দ।

১৯৭৫ সালে লাকী আখন্দ তার ছোট ভাই হ্যাপী আখন্দের একটি অ্যালবামের সঙ্গীতায়োজন করেন। অ্যালবামটিতে ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ ও ‘কে বাঁশি বাজায়রে’ গান দুটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।

১৯৮৪ সালে লাকী আখন্দ তার নিজ নামেই প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন। অ্যালবামটি সরগমের ব্যানারে প্রকাশিত হয়। এই অ্যালবামের ‘আগে যদি জানতাম’, ‘আমায় ডেকোনা’, ‘মামুনিয়া’ ও ‘এই নীল মনিহার’ গানগুলো শ্রোতাপ্রিয় হয়। যেগুলো এখনো সমানভাবে জনপ্রিয়।

এছাড়া কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে ‘যেখানেই সীমান্ত তোমার’, সামিনা চৌধুরীর কণ্ঠে ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে’ এবং জেমসের কণ্ঠে ‘লিখতে পারি না কোনো গান আর তুমি ছাড়া’ কালজয়ী গানগুলোর সুরও করেছেন লাকী আখন্দ।

লাকী আখন্দ দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যান্সারে ভুগেছিলেন। ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি নিজের আরমানিটোলার বাসাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেঁচে থাকলে আজ ৬৫তম জন্মদিন পালন করতেন গুণী এ শিল্পী। তার গিটারে হয়ত বেজে উঠতো আবার এলো যে সন্ধ্যার মতো কালজয়ী নতুন কোনো গানের সুর।

/এসএইচ

Exit mobile version