পাচার করা টাকা বৈধ করার সুযোগকে যেভাবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা

|

দেশ পাচার হয়ে যাওয়া টাকা বৈধ করার একটি সুযোগ রাখা হয়েছে এবারের বাজেটে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, পাচার করা টাকা কর দিয়ে বৈধ করে নেয়া যাবে। কর দেয়া হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ যেকোনো কর্তৃপক্ষ এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না। তবে এ প্রস্তাব বা সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক মনে করছেন না বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।

যমুনার সাথে বাজেট সংক্রান্ত এক আলোচনায় এ অর্থনীতিবিদ বলেন, রাজস্ব আদায় এবং ডলারের যোগান বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। তবে পাচার করা টাকা বৈধ বানানোর এ সুযোগ একটি অনৈতিক দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। এছাড়া ব্যাপারটি রাজস্ব আদায় এবং ডলারের যোগানের ক্ষেত্রে আশানুরূপ কোনো ফল দেবে না বলেই মনে করেন তিনি।

বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে এর ওপর ১৫ শতাংশ, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১০ শতাংশ ও বাংলাদেশে পাঠানো নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ হারে করারোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

তবে অর্থনীতিবিদ জাহিদ বলেন, আমরা অর্থপাচারকে নিরুৎসাহিত করতে চাই, পাচার করা টাকা বৈধ করার সুযোগ দিয়ে আমরা যে সিগন্যাল দিচ্ছি, সেটি নৈতিকতা পরিপন্থী। এই স্কিমের মাধ্যমে আমরা কাউকে অর্থপাচারে উৎসাহিত করছি কিনা, এমন প্রশ্ন তৈরি হতে পারে। ফলে এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক মনে করছেন না জাহিদ হোসেন।

বাংলাদেশি এ অর্থনীতিবিদ বলেন, জনজীবনে সবচেয়ে অস্বস্তিকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। বর্তমান বাজেট মূল্যস্ফীতিতে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটি প্রভাবই ফেলবে। এ বাজেটে সার এবং বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবকে সরকার ভর্তুকি দিয়ে সামাল দিয়েছে। এই দুটি খাতে ভর্তুকি আরও বাড়ানোর ফলে আগামীতেও এটি অব্যাহত থাকবে। এটিকে বাজেটের ইতিবাচক প্রভাব মনে করছেন তিনি।

তবে তিনি বলেন, রিভাইসড বাজেটের তুলনায় বিশ শতাংশ ঘাটতি বেশি হওয়ার ব্যাপারটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি মূল্যস্ফীতির পালে আরও হাওয়া দেবে। এছাড়া যেসব পণ্যে কর বাড়ানো হয়েছে, সেগুলোও মূল্যস্ফীতির মাত্রা বাড়াবে বলে মনে করেন জাহিদ হোসেন।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply