সকল ঠাট্টা-তামাশা পেছনে ফেলে ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত

|

ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানান বেলায়েত শেখ।

অদম্য উৎসাহ আর অধ্যাবসায়ের দৃষ্টান্ত দেখালেন গাজীপুরের বেলায়েত শেখ। ৫৫ বছর বয়সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। নবম শ্রেণি থেকে নতুন করে পড়া শুরুর পর থেকে বেলায়েতকে সইতে হয়েছে মানসিক যন্ত্রণা আর হাসি-তামাশা। কিন্তু দৃঢ় সংকল্পে পেছনে ফেলেছেন সব বাধা।

শনিবার (১১ জুন) ঢাবিতে ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় গাজীপুরের বেলায়েত শেখের সিট পড়েছে গণিত ভবনে। কেন্দ্রে ঢুকে যান তিনি সাড়ে দশটার মধ্যেই। কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তার ছোট ছেলে এইচএসসি শিক্ষার্থী সাদেক। বাকি সব ক্ষেত্রে অভিভাবকরা তাদের সন্তানের জন্য দুশ্চিন্তা করলেও সাদেক ভাবছিলেন তার বাবাকে নিয়ে। সাদেক জানালেন, পরীক্ষায় কমন না পড়লে কীভাবে লিখবে বাবা, তা নিয়েই দুশ্চিন্তা কাজ করছিল তার মাঝে।

পরীক্ষা শেষে হাসিমুখেই বের হন বেলায়েত। কেমন হলো জিজ্ঞেস করতেই জানালেন, আশা ছাড়ছেন না তিনি। যদিও শেখার কোনো শেষ নেই, তবুও এই বয়সে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ সহজ নয়। কেবল অদম্য স্পৃহাই পারে এমন গল্প তৈরি করতে। বেলায়েত শেখ জানালেন, একটি শব্দ একশোবার লিখেও মুখস্থ করেছেন তিনি। শুনেছিলেন যে, বয়স ৪০ অতিক্রম করার পর নাকি আর মস্তিষ্ক ভালোভাবে কাজ করে না। কিন্তু তিনি এসব বাধা জয় করার চেষ্টা করেছেন। এই বন্ধুর পথে মনোবল হারাননি। ৪-৫ রাত না ঘুমিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছেন ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার।

বেলায়েত জানান, তাকে সমুদ্রসম পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। আর এই যাত্রায় তিনি পাশে পেয়েছেন স্বজনদের। বেলায়েত সে প্রসঙ্গে জানান, মনোবল যোগাতে তার আত্মীয়রা প্রায়ই বলতেন, আল্লাহ যদি চান তো ১১১টি সিট থেকে ১টি সিট পাওয়া যেতে পারে। বেলায়েত এরপর থেকে করে গেছেন অক্লান্ত চেষ্টা। নিজের সন্তান তো বটেই সকল শিক্ষার্থীদের প্রতি তার আহ্বান, উদ্যম হারানো যাবে না কিছুতেই। তিনি বলেন, আমার সাথে মায়ের দোয়া আছে। বাকিটা আল্লাহ ভরসা। আর যতদিন বাঁচি, লেখাপড়া করে যাবো।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply