নির্বাচনে ইভিএম’র পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে ইসির সংলাপ

|

সাবেক নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তাদের সাথে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সংলাপ।

সাবেক নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তাদের সাথে সংলাপে বসেছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। এই সংলাপে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে-বিপক্ষে মত দিয়েছেন অনেকেই। এছাড়া রিটার্নিং অফিসার এবং নির্বাচনের বর্তমান কাঠামো নিয়েও কথা হয়েছে।

রোববার (১২ জুন) সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এ সংলাপ শুরু হয়। এ সময় সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুদার বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই সৃষ্ট ও সফল নির্বাচনের জন্য সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।

বৈঠকটিতে ইভিএম’র পক্ষে বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি ও মত দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে বিতর্ক এড়াতে ইভিএম বাদ দেয়ার পক্ষে কথা বলেন সাবেক সচিব আবদুল্লাহ। ইভিএম’র বিপক্ষে খুব বেশি জোরালো যুক্তি ছিল না। মূলত, বিতর্ক এড়ানোর দিকেই জোর দিয়ে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট আয়োজনের কথা বলেন তারা। আর সহিংসতা এড়াতে ইভিএম’র পক্ষে কথা বলেন আরেক সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক।

এছাড়া রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশিরভাগেরই মত ছিল, নির্বাচন কমিশনের যে নিজস্ব কর্মকর্তা আছে তাদের দিয়েই জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করানো উচিত। এক্ষেত্রে আরও ট্রেনিং দেয়া এবং জনবল বাড়ানোর দিকেও মত দিয়েছেন অনেকেই।

বর্তমান নির্বাচন কাঠামোর মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুদার। এ ক্ষেত্রে সংবিধান ও আইন পরিবর্তন করার ব্যাপারেও তিনি বলেছেন। তবে এটি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের মধ্যে নেই।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে যারা থাকেন তাদের পেছনেই নির্বাচনের ৭০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়। সেক্ষেত্রে, সেনাবাহিনী মোতায়েন না করলে তাদের একটি বড় খরচ বেঁচে যাবে। অন্য কোনো উপায়ে নিরাপত্তা বিধান করা যায় কিনা, সে ব্যাপারে ভাবার জন্য বলেছেন তিনি। এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আগে যেমন সহজেই নির্বাচন আয়োজন করা যেতো, সে তুলনায় এখন ঝুঁকি রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন প্রয়োজন রয়েছে বলে মত দেন তিনি।

নির্বাচনের বর্তমান কাঠামো নিয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুর রউফ বলেন, সরাসরি প্রার্থীকে ভোট দেয়ার কারণে মনোনয়ন বাণিজ্য হয়। এ ব্যাপারটির সাথে ইসি একমত প্রকাশ করেন। তবে বিষয়টি সরকারের এখতিয়ারের অধীনে থাকায় ইসি এ ব্যাপারে মতামত দিতে পারেন না বলেও উল্লেখ করা হয়। সেই সাথে, মনোনয়ন বাণিজ্য হয় বলে নির্বাচনের পরে প্রার্থীরা তাদের অর্থ তুলে নেয়ার সংগ্রহ করে থাকে বলেও একমত হন তারা। নির্বাচন কমিশন জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যেই তারা শপথ নিয়েছেন। তবে বিদ্যমান কাঠামোতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করাকে চ্যালেঞ্জ বলেও মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশন।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply