আখাউড়া প্রতিনিধি:
ত্রিপুরায় পিটিয়ে হত্যার ৩দিন পর ডালিম মিয়া নামে এক বাংলাদেশি যুবকের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ। সোমবার (১৩ জুন) রাত ১১টার দিকে আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তপথে ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার টাকারজলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমানের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছেন। এসময় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নিহত বাংলাদেশি যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সীমান্তবর্তী মাদলা গ্রামের ডালিম মিয়া। এদিকে একই এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম গুরুতর আহত অবস্থায় আগরতলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, কসবা উপজেলার ডালিম মিয়াসহ জহিরুল (৩০), সাইফুল ইসলাম (৩০) এবং হৃদয় মিয়াসহ (২৬) কয়েকজন বাংলাদেশি মিলে শুক্রবার রাতে কসবা সীমান্তপথে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। ভারতীয় টাকারজলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং যমুনা নিউজকে বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের একটি স্কুল থেকে শনিবার সকালে এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। এসময় সেখানকার অধিবাসীরা তাদের চোর সন্দেহ করে ধাওয়া করে ডালিমকে ধরে ফেলে এবং ঘটনাস্থলে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় জহিরুল ইসলাম নামে অপর এক বাংলাদেশি যুবক পিটুনিতে গুরুতর আহত হয়। অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে জহিরুলকে টাকারজলা থানা পুলিশ জনরোষের কবল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
তবে এ বিষয়ে নিহত ডালিম মিয়ার পিতা মোহন মিয়াসহ স্বজনরা যমুনা নিউজকে জানান, মাদলা গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুল (৩৫) কয়েকদিন পূর্ব থেকেই ভারতে অবস্থান করছিলেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিমুলের ভাই জহিরুলসহ অন্যরা ডালিমকে ভারতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। মোহন আরও জানান, শিমুলের স্ত্রীর সঙ্গে ডালিমের পরকীয়া চলছিল। পারিবারিকভাবে বিষয়টি আপস-মীমাংসা হলেও পরকীয়ার জের ধরেই শিমুল ও তার লোকজন ডালিমকে হত্যা করে বলে অভিযোগ তার।
অবশ্য আখাউড়া স্থলবন্দর চেকপোস্ট বিজিবি ক্যাম্প ইনচার্জ মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ডালিমকে কেন এবং কে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা জানাতে পারেনি বিএসএফ। তিনি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের পুলিশের কাছ থেকে আখাউড়া থানা পুলিশ সোমবার রাত ১১টায় ওই লাশ গ্রহণ করে। আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, যেহেতু হত্যাকাণ্ড ভারতে ঘটেছে সুতরাং ভুক্তভোগী পরিবার এ বিষয়ে বিচার চাইলে ভারতের আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন।
/এডব্লিউ
Leave a reply