স্টাফ করেসপনডেন্ট, সিরাজগঞ্জ:
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, এর প্রভাব পড়েছে যমুনা নদীতেও। এতে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। জেলার কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় আরও ৪৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা করছেন নদী পাড়ের মানুষ।
শনিবার (১৮ জুন) সকাল ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন।
তিনি জানান, জেলার কাজিপুর পয়েন্টে গত ১২ ঘণ্টায় (সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা) ৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শনিবার (১৮ জুন) সকাল ৬টায় জেলার কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ২৬ মিটার। আর এখানে পানির বিপদসীমার স্তর ধরা হয় ১৫ দশমিক ২৫ মিটারে।
ওপরদিকে সিরাজগঞ্জ শহরের হার্ড পয়েন্ট এলাকায় পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৩২ মিটার। যেখানে বিপদসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ মিটারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (১৮ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি ৪৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে যমুনায় আরও কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে সিরাজগঞ্জে বন্যা হতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে, গত কয়েকদিন ক্রমাগত পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনার পাশাপাশি ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসগর, ইছামতীসহ চলনবিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের উঠতি ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।
অপরদিকে, যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম যমুনা নিউজকে বলেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে নিম্নবর্তী এলাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ভাঙনসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
/এসএইচ
Leave a reply