আন্তর্জাতিক মানের ফ্লাড লাইট, ড্রেসিংরুম সমৃদ্ধ কোনো স্টেডিয়াম না থাকায় দেশে জাতীয় দলের কোনো ম্যাচ আয়োজন করলেই প্রতিবার জরিমানা গুনতে হয় বাফুফেকে। আর এই জরিমানা অনেকটাই নীরবে শোধ করেন বলে জানান কাজী সালাউদ্দিন। ভারত যেখানে ফুটবলে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নিজেদের অবস্থান উপরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তখন আক্ষেপ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বাফুফে সভাপতির। তবে অর্থের অভাবে যে ক্লাবগুলো পাতানো খেলার দিকে ঝুঁকছে তাদের ছাড় দেয়া হবে না বিন্দুমাত্র, জানান তিনি। যমুনা টেলিভিশনকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন কাজী সালাউদ্দিন।
বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে সাধারণত তুলনা হয় উপমহাদেশের মধ্যেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ২০১৪ সালে ‘আই লিগ’র পদক্ষেপ নেয়, যা সময়ের সাথে সাথে হয়েছে জমজমাট। ফুটবল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা বা আয়োজক হওয়া, এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করে ভারত এখন টানা দু’বার খেলে ফেললো এশিয়া কাপ। বাংলাদেশে চলমান রয়েছে ঘরোয়া লিগ। তবে আরও একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যায় কিনা, এমনটি জানতে চাওয়া হয়েছিল বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের কাছে। তিনি বলেন, ভারত যে অবস্থা থেকে এখানে এসেছে, তাদের কিন্তু আর্থিক কাঠামো সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওরা বছরে ২ থেকে আড়াইশো কোটি টাকা খরচ করে। ওদের প্রতিটি টিম ১-২শ’ কোটি টাকা খরচ করে। আমাদের সেই অবকাঠামো নেই। সেখানে স্পন্সর এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ১ হাজার কোটি টাকাও অনায়াসে পাওয়া যায়। তখন বিদেশে দল নিয়ে ট্রেনিং করা, বিদেশি কোচ আনা সম্ভব হয়। এবং আই লিগের সব ক্লাবেই দেখবেন, বিদেশি ভালো কোচ আছে। আমাদের সেসব নেই; থাকলে এখানেও তাই হতো।
কাজী সালাউদ্দিন আরও বলেন, এশিয়া থেকে কোয়ালিফাই করে জাপান, কোরিয়া, কাতার, সৌদি আরব। আর্থিকভাবে তারা খুবই শক্তিশালী। তারা বিনিয়োগ করে এখন ফলাফল পাচ্ছে। আমাদের একটা মাঠ নাই। একটা সম্পূর্ণ ফিফা স্টেডিয়াম নাই। আমরা অনেক কিছুই করার চিন্তা করি। কিন্তু কীভাবে করবো? আমি যতবারই বিদেশি দল এনেছি, এএফসি কাপের ভেন্যু নিয়েছি ততবারই ২০ হাজার, ২৫ হাজার, ৩০ হাজার ডলার জরিমানা হয়েছে। এটা আপনারা জানেন না। জরিমানা হয়েছে কারণ, ফ্লাডলাইট মানসম্মত নয়, ড্রেসিংরুমেরও একই অবস্থা। আমরা চুপচাপ এই জরিমানা দিয়ে যাচ্ছি। এখন, আমরা যদি সেই পর্যায়ে যেতে চাই আমাদের মাঠ মানসম্পন্ন হতে হবে। ফ্লাডলাইট, ড্রেসিংরুম উন্নত করতে হবে। সকল সুযোগসুবিধা থাকতে হবে। এসব কিছু সম্পন্ন করতেই সরকারের সাথে কাজ করছি। একটা প্রজেক্ট তৈরি করেছি। আশা করি, এইসব কিছুই করতে পারবো। সেক্ষেত্রে হয়তো আগামী ৫ বছরে আপনারা বড়সড় একটি পরিবর্তন দেখবেন।
ক্লাবগুলো পাশে না থাকলে বাফুফের পক্ষে অনেক কিছুই করা সম্ভব হবে না। তবে ম্যাচ পাতানোর দায়ে দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাবগুলোকে সাসপেন্ড করা হয়েছে জানিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেন, এক্ষেত্রে কোনো আপস করা হবে না। বাফুফে তিনটি বিষয়ে কোনো আপস করবে না; সেগুলো হচ্ছে মাদক, পাতানো ম্যাচ ও বর্ণবৈষম্য। কারণ, এখানে কোনো শর্টকাট নেই। এজেন্সিগুলো এক্ষেত্রে কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদনে ম্যাচ পাতানো প্রমাণিত হলেই দায়ীদের সাসপেন্ড করা হবে। কোনো তদবিরেও কোনো কাজ হবে না।
/এম ই
Leave a reply