নেত্রকোণার বন্যায় পানিবন্দি সাত লাখ মানুষ, উদ্ধারে নামছে সেনাবাহিনী

|

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বসতবাড়ি।

স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা:

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে নেত্রকোণায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। এরমধ্যে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। উপজেলা দুটির প্রায় সবগুলো বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। খালিয়াজুরি, সদর, আটপাড়া ও বারহাট্টা উপজেলায় প্রায় সাত লাখ মানুষ পানিবন্দি। জেলার সঙ্গে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরের সড়কপথ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ছয়টি উপজেলায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, জেলার খালিয়াজুরিতে আটকে পড়াদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর ১০৪ সদস্যের একটি দল রোববার (১৯ জুন) থেকে কাজ করবে। জেলার দশ উপজেলায় ১৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বন্যাদুর্গত এলাকায় এরই মধ্যে ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ মেট্রিকটন জিআর চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান অঞ্জনা খান। বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

এদিকে, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা শহরের সব এলাকায় পানি থৈ থৈ করছে। অনেকেই বাসাবাড়ি ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়ি ও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিচ্ছেন। প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কলমাকান্দ-ঠাকুরাকোনা নবনির্মিত সড়কের স্থানে স্থানে তাবু টানিয়ে গরু-ছাগল, হাস-মুরগীসহ গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। ওই সড়কটির হিরাকান্দা, আশারানী, পাবই ও বাহাদুরকান্দাসহ বেশকিছু স্থান নিচু থাকায় বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ভেসে গেছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুকুরের মাছ। গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কটও দেখা দিচ্ছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওয়াদুল্লাহ বলেন, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টাসহ দশ উপজেলায় প্রায় সাড়ে ছয় শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এসব বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণার কংস, মোমেশ্বরী, ধনু, উব্দাখালিসহ কয়েকটি নদ নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

খালিয়াজুরির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম আরিফুল ইসলাম জানান, খালিয়াজুরিতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পৌঁছেছেন। শনিবার রাত পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ২ হাজার মানুষ ছিল। বিভিন্ন এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেনাবাহিনী কাজে নামবে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply