আনুষ্ঠানিকভাবে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় হিসেবে পথচলা শুরু হলো জার্মান ডিফেন্ডার আন্তোনিও রুডিগারের। প্রিয় দলের হয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসেই তিনি যা বললেন, তাতে মাঠের ফুটবলের আগেই তাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত হতে পারেন সমর্থকরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার আগ্রহ উপেক্ষা করে যে জার্মান এই ডিফেন্ডার এসেছেন স্পেনের সফলতম ক্লাবটিতে। এসেই বলেছেন, বার্সা আমার প্রতি আগ্রহী ছিল। কিন্তু আমি আমার ভাইকে বলেছিলাম, হয় রিয়াল মাদ্রিদে যাব নয়তো নয়।
চলতি মাসের শুরুতে রিয়াল জানায়, চার মৌসুমের জন্য রুডিগারকে দলে টেনেছে তারা। বাকি ছিল কেবল মেডিকেল। সব প্রক্রিয়া শেষ করে সোমবার (২০ জুন) চুক্তিতে সই করেন তিনি। চেলসির সাবেক এই ডিফেন্ডারকে পেতে আগ্রহী ছিল বার্সেলোনা এবং আরও কয়েকটি দল। কাতালান ক্লাবটি তাকে প্রস্তাবও দিয়েছিল, বললেন রুডিগার। কিন্তু তার মনে তো ছিল কেবলই রিয়াল।
মাদ্রিদের দলটির হয়ে রুডিগারের অভিষেক হতে পারে বার্সেলোনার বিপক্ষেই, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক-মৌসুম টুর্নামেন্টে। ক্লাসিকো ম্যাচটি হবে আগামী ২৩ জুলাই। ম্যাচটি প্রস্তুতিমূলক হলেও রুডিগার সেখানেও জয় ছাড়া কিছু ভাবছেন না। বলেন, ক্লাসিকোয় আমার অভিষেক? যদিও এটি প্রাক-মৌসুমের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ, তবে আমরা জিততে চাই। আমি দারুণ রোমাঞ্চিত।
গত কয়েক মৌসুম চেলসির রক্ষণ দারুণভাবে সামলানো রুডিগার বলেন, আমার বাবা-মা ফুটবল সম্পর্কে বেশি কিছু বোঝেন না, তবে তারা আমার জন্য খুশি। তারা জানেন রিয়াল মাদ্রিদ অনেক বড় দল।
২০২১-২২ মৌসুমে রেকর্ড ১৪তম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতে রিয়াল। এছাড়া লা লিগা চ্যাম্পিয়নও হয় সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের দলটি। রিয়ালের জেতার মানসিকতায় মুগ্ধ রুডিগার। দলটির হয়ে অনেক শিরোপা জিততে চান তিনি। বলেছেন, ১৪ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়, অসাধারণ। এতেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এই ক্লাব কী এবং কেমন, আর তা হলো এখানে জয়ই একমাত্র কথা। চ্যাম্পিয়নস লিগের (লিভারপুলের বিপক্ষে) ফাইনাল ম্যাচের আগেই জানতাম যে, আমি মাদ্রিদে যোগ দিতে যাচ্ছি। তাই আমি তাদের সমর্থন করেছিলাম। তাদের জিততে দেখে দারুণ লেগেছিল। এই ক্লাবের জন্য আমি নিজেকে উজাড় করে দেবো এবং সম্ভাব্য প্রতিটি শিরোপা জেতার চেষ্টা করব।
তাকে রিয়ালে নিয়ে আসার জন্য সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের প্রতি কৃতজ্ঞ রুডিগার। প্রতিশ্রুতি দিলেন, দলটির জন্য নিজের সবটুকু ঢেলে দেবেন তিনি। রুডিগার বলেছেন, এটি আমার পরিবার এবং আমার জন্য একটি বিশেষ দিন। আমি আমার বাবা-মাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, কারণ তারা না থাকলে আমি কখনই আজকের জায়গায় আসতে পারতাম না। তারা সবসময় আমাকে সমর্থন করেছেন এবং এটি জীবনে সবসময় খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমাকে এই দারুণ ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য সভাপতিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, সম্ভাব্য প্রতিটি ট্রফি জিততে এই ক্লাবের জন্য আমি শতভাগ ঢেলে দেব।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চেলসির হয়ে ২০০ ম্যাচ খেলেছেন রুডিগার। লন্ডনের ক্লাবটির হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগ, এফএ কাপ, উয়েফা সুপার কাপ এবং ক্লাব বিশ্বকাপ। ২০২১-২২ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের বর্ষসেরা একাদশেও ঠাঁই পেয়েছেন রুডিগার। জাতীয় দলেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তিনি; ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত জার্মানির হয়ে খেলেছেন ৫০ ম্যাচ।
আরও পড়ুন: ভয় থাকলেও আতঙ্কিত নন তিতে, বিশ্বকাপ জয়ের পরিকল্পনা ব্রাজিল কোচের
/এম ই
Leave a reply