ম্যানেজিং কমিটির সদস্যকে ঠিকাদারির কাজ না দেয়ায় প্রধান শিক্ষককে মারধর

|

অভিযুক্ত লিয়াকত আলী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যকে রঙের কাজ না দেয়ায় ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সকালে জেলার বোদা উপজেলার গোবিন্দগুরু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনাটি ঘটে।

ওই বিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির সদস্য লিয়াকত আলী তার লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলাই চন্দ্র দাসকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এ ঘটনায় বোদা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।

এদিকে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে ওই বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র সংস্কার কাজের জন্য দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ পায় প্রতিষ্ঠানটি। টাকা পাওয়ার পর সংস্কার কাজ শুরু হয়।

গত ১৪ জুন বিদ্যালয়ে সমঝোতায় নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠিত হয়। রংমিস্ত্রি লিয়াকত আলী অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত হন। বিদ্যালয়ের রঙের কাজটি তাকে দেয়ার দাবি করেন লিয়াকত ৷ ১৫ হাজার টাকায় কাজটি করে দেবেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু তার কাজের মান খারাপ হওয়ায় প্রধান শিক্ষক হিমেল ইসলাম নামে এক যুবককে রঙের কাজটি দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন লিয়াকত।

মঙ্গলবার সকালে রঙের কাজ করতে গেলে লিয়াকত আলী লোকজন নিয়ে গিয়ে তা বন্ধ করে দেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক বলাই চন্দ্র দাস প্রতিবাদ জানালে তাকে চড় থাপ্পড় মারতে থাকেন লিয়াকত। পরে অন্য সহকর্মী ও স্থানীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মনোরঞ্জন বর্মন বলে, আমরা সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এ সময় কয়েকজন লোক নিয়ে এসে লিয়াকত আলী কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রধান শিক্ষককে মারধর শুরু করেন । এখন আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। বিদ্যালয়ে এখন আমরা নিরাপদ নই।

ভুক্তভোগী শিক্ষক বলাই চন্দ্র দাস বলেন, সামান্য এই রঙের কাজ না দেয়ায় ম্যানেজিং কমিটির নতুন সদস্য লিয়াকত আলী লোকজন নিয়ে আমার ওপর হামলা করেছে। সবার সামনেই আমাকে মারধর করেছে। আমরা তাদের সন্তানদেরকেই পড়াই। তাদের শিক্ষার ভালো পরিবেশ তৈরির জন্যই কাজ করছিলাম। তাদের কাছে এমন আচরণ আমরা প্রত্যাশা করিনি। এ লজ্জা পুরো শিক্ষক সমাজের। আমি বোদা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।

এবিষয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য লিয়াকত আলী বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির কারও সাথে কোনো পরামর্শ না নিয়ে নিজের মতো করে কাজ করছেন। এ বিষয়টি জিজ্ঞাসা করায় তিনি আমার ওপর চড়াও হন। এ সময় একটু ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে এই আরকি। এখন তিনি বিষয়টি বাড়াচ্ছেন।

দুই পক্ষের দু’টি অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply