অনেক সময়ই নিছক ঠাট্টা করে চার্লি চ্যাপলিনের সঙ্গে তার তুলনা করা হয়। কারণ একটাই। দু’জনেই সাফল্যের শিখরে উঠেছেন কথা না বলে। চিনতে পারছেন এই ব্যক্তিকে? কখনও ঘরের ভিতর, কখনও বাড়ির রান্নাঘরে, কখনও বা ডাইনিং রুমে মজার ভিডিও বানিয়ে সকলের মুখে হাসি ফুটিয়ে চলেছেন বিখ্যাত টিকটকার খাবি লেম।
খোসা না ছাড়িয়েও কলা খাওয়া যায়, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে কলা কেটে নানা জটিল পদ্ধতিতে কলার সাদা অংশের খোঁজ অবশেষে মেলে- এ রকম প্রচুর ‘লাইফ হ্যাকস’-এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভর্তি। এসব ভিডিওতে খুব সহজ কাজ জটিল পদ্ধতিতে করা হয়। কিন্তু এই কাজগুলিই করোনার সময়ে সাধারণভাবে করে দেখাতে শুরু করেন খাবি লেম। কোনো কথা না বলে শুধুমাত্র মুখভঙ্গিমার মাধ্যমে তিনি এমন মজার ভিডিও বানিয়েই টিকটকে নিজের পরিচিতি বানিয়ে ফেলেন। বর্তমানে তার অনুরাগীর সংখ্যা প্রায় ২০ কোটি।
চার্লি দি অ্যামেলিও, যার টিকটকে অনুরাগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ, তাকেও সম্প্রতি ছাপিয়ে গিয়েছেন খাবি। তার প্রতিটি ভিডিও হাস্যরসে পরিপূর্ণ হলেও তার ব্যক্তিগত জীবনে জটিলতা ছিল প্রচুর। এক বছর বয়সেই সেনেগাল থেকে পরিবারসহ ইতালিতে চলে আসেন তিনি। ছোট থেকে ডিসলেক্সিয়া রোগে আক্রান্ত খাবি। স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। কখনও কারখানায়, কখনও হোটেলের কর্মী হিসাবে কাজ করতেন। মাসিক বেতন হাজার ডলারের বেশি ছিল না কখনই। তবে ২০২০ সালে তাকে চাকরি থেকে বের করে দেয়া হয়।
চাকরিচ্যূত হওয়ায় পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, মজার ভিডিও বানিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দর্শকদের মনোরঞ্জন করবেন। ভিডিও বানানো শুরুও করলেন খাবি। প্রথম এক মাসে তার ভিডিও মাত্র ন’জন দেখতেন। সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যাও ছিল মাত্র দুই। তবুও তিনি ভেঙে পড়েননি। নিয়মিত ভিডিও বানিয়ে গিয়েছেন। ধীরে ধীরে বিপুল পরিমাণ দর্শকদের কাছে পৌঁছালেনও তিনি। এখন তার অনুরাগীরা রয়েছেন বিশ্বজুড়ে।
এখন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বিশেষ অতিথি হিসাবে খাবি লেমকে দেখা যায়। ইডি শিরান, লিয়োনেল মেসি প্রমুখ খ্যাতনামা ব্যক্তিদের সাথে দেখাও করেছেন তিনি। সেনেগাল থেকে আসার পরে তার কাছে ইতালির নাগরিকত্ব ছিল না। ২০২২ সালের ২৪ জুন ইতালি সরকার খাবিকে নাগরিকত্ব দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
ইউএইচ/
Leave a reply