স্বজনদের সাথে ঈদ করতে ভারত থেকে অবৈধ পথে দেশে ফেরার সময় নদী পাড়ি দিতে গিয়ে দুই সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা-মা। মোটা অংকের টাকা নিলেও দুই শিশুকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি দালালরা। স্বজনরা জানায়, গত ১ জুলাই গভীরাতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধর্মপুর সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরার সময় ঘটে এই ঘটনা। বিএসএফ ধাওয়া দিলে পরিবারটি নেমে পড়ে নদীতে। স্থানীয়রা জানায়, বিভিন্ন সীমান্তে সক্রিয় রয়েছে একাধিক দালাল চক্র। ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে দরিদ্র নারী-পুরুষদের পাচার করে তারা।
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের সাথে ভারতের সীমান্ত প্রায় ৩শ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৫০ কিলোমিটার কাঁটাতারবিহীন। দারিদ্রপীড়িত এই জেলায় ভারী শিল্পকারখানা গড়ে না ওঠায় রয়েছে কর্মসংস্থানের অভাব। এরই সুযোগ নেয় দালাল চক্র। ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করা হয় দরিদ্র নারী-পুরুষকে। অভিযোগ আছে, অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার জন্য অনেক সময় বিএসএফকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে দালাল চক্র।
অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার সময় মাঝেমধ্যেই ঘটে আটকের ঘটনা। আবার মৃত্যুর ঘটনাও কম নয়। সবশেষ গত শুক্রবার ফুলবাড়ী উপজেলার ধর্মপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে দেশে ফেরার সময় নদীতে ডুবে প্রাণ গেছে দুই ভাইবোনের। কোনোমতে বেঁচে ফিরেছে তাদের মা-বাবা। তারা জানান, দালাল চক্র গভীররাতে কাঁটাতারের বেড়া পার করে দেয়। বিষয়টি টের পেয়ে ধাওয়া দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী, বিএসএফ। নীলকমল নদী পার হতে গিয়ে মায়ের হাত থেকে ছুটে ভেসে যায় ৪ বছর বয়সী ছেলে শাকিবুর ও ৮ বছরের মেয়ে পারভীন।
স্থানীয়রা বলছেন, সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় দালাল চক্রের কারণে প্রায়ই ঘটে এমন ঘটনা। অনেক সময় অবৈধ পথে আসা মানুষদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে ভুল পথ দেখিয়ে দেয় তাদের।
এদিকে, দুই শিশুর মরদেহ নীলকমল নদীর ভারতীয় অংশ ভেসে উঠলে উদ্ধার করে সেখানকার পুলিশ। দ্রুত মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
/এডব্লিউ
Leave a reply