শ্রীলঙ্কার দোর্দণ্ড ক্ষমতাশালী রাজাপাকসে পরিবারের পতন এখন বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোচনার বিষয়। ক্ষুব্ধ জনতা প্রেসিডেন্টের বাসভবনের দখল নেবার পর ভেতরে ঢুকে যা যা করেছে, ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসছে তা। কেউ খেয়েছে, কেউ সোফায় আয়েশ করেছে। বাদ যায়নি বিছানায় শোয়াও। প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ যেন হয়ে উঠেছে জনতার মুক্তাঞ্চল। লঙ্কান প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সুইমিং পুলে সাধারণ জনতার উল্লাসের ভাইরাল এই ভিডিও যেন হার মানিয়েছে সিনেমার দৃশ্যকেও।
বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকা দাপুটে রাজাপাকসে পরিবারের আরাম আয়েশের প্রতীক এ প্রাসাদ। যার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জনতা। বাগান থেকে বারান্দা, হলরুম থেকে বেডরুম, বিচরণ সব জায়গায়।
প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রবেশ করেছেন এরকম বেশ কয়েকজন বললেন, এই বাড়ির জৌলুস দেখে বোঝা যায়, তাদের জনগণের কথা ভাবার সময় নেই। এমন জায়গা জাতীয় সম্পদের অপচয়।
এক ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারী বলেন আমাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। অথচ প্রাসাদে এসি চলছে। ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই এদের। আরও আগে বিদায় নিলে এই দিন দেখতে হতো না।
প্রেসিডেন্ট ভবনের নরম সোফায় বসে আরাম করেছেন অনেকেই। কেউ ঘুরে ঘুরে দেখছেন চারপাশ। ভবনের খাবারও চেখে দেখছেন অনেকে। যে বিছানায় আয়েশ করে ঘুমাতেন প্রেসিডেন্ট, সেখানেও গা এলিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। লঙ্কান রাজনীতিকদের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এ প্রাসাদে ঢুকে সেলফি তুলতে ভোলেননি অনেকে। এমন হাসি-ঠাট্টা-উৎসব দেখে কে বলবে, খানিকক্ষণ আগেই এ জনতার দাপটেই কাঁপছিল রাজপথ?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষোভকারী বলেন, এটা বললে ভুল হবে না যে আজ আমরা জয়ী হয়েছি। সব ভেদাভেদ ভুলে একসাথে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের দখল নিয়েছি আমরা। আজ দেশ ও বিশ্ব জনগণের ক্ষমতা দেখলো। দীর্ঘদিন ধরেই প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে আসছি। কিন্তু তারা ক্ষমতা জোরপূর্বক আঁকড়ে রেখেছে।
শ্রীলঙ্কান জনতার এ ঢল সামলানোর ক্ষমতা ছিল না নিরাপত্তা বাহিনীর। তাই শুরুতে আক্রমণাত্মক থাকলেও পরে জনতার দাপটের কাছে নতি স্বীকার করে তারা। রীতিমত অসহায় ছিলেন প্রেসিডেন্ট ভবনের পুলিশ আর সেনা সদস্যরা। এক পর্যায়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া তাদের করার ছিল না কিছুই।
/এসএইচ
Leave a reply