গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোমবার রাতে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে স্বামী পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শ্বশুরকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত বর্ষা রাণী রাজভর (১৮) গাজীপুর বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্রী এবং গাজীপুর মহানগরের পশ্চিম বিলাশপুর এলাকার বাদল রাজভরের মেয়ে। বর্ষার স্বামী দীপ্ত রাজভর (২৪) গাজীপুর মহানগরের উত্তর বিলাশপুর এলাকার রামনাথ রাজভরের (৫৫) ছেলে।
নিহতের মা লক্ষী নারায়ন রাজভর জানান, ২০২১ সালের মার্চে প্রেম করে বর্ষা রাণী ও দীপ্ত’র বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেয়েকে আমাদের বাড়িতে তেমন আসতে দিতেন না। মেট্রিক পাশ করার পর এবার বর্ষাকে গাজীপুর বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন বর্ষা আরও লেখাপড়া করুক তা পছন্দ করে না। বর্ষার স্বামী বেকার। বিভিন্ন সময় স্বামী-শাশুড়িসহ যৌতুকের জন্য বর্ষাকে চাপ দিতেন। সর্বশেষ দীপ্ত’র দাদিকে দিয়ে বর্ষার কাছে ৫ লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক দাবি করেছিল। এসব নিয়ে তাদের সংসারে বিভিন্ন সময় কলহ হতো। গত সোমবার রাত ৮টার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামনাথ মোবাইল ফোন করে আমাদের জানান, বর্ষা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। তাকে দেখতে হাসপাতালে যেতে বলেন। ১১টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় স্বামী দীপ্ত কাছে ছিল না। ঘটনার পর থেকে সকলেই বর্ষার স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।
জয়দেবপুর থানার এসআই মো. মোশারফ হোসেন জানান, বর্ষার কপালে ও গলার নিচে কালো দাগ রয়েছে। সোমবার রাতেই হাসপাতাল চত্বর থেকে দীপ্তর বাবা রাম নাথকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। স্বামী-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন ঘরে তালা আটকিয়ে পালিয়ে গেছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা মন্তব্য করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে দীপ্ত মৃতাবস্থায় হাসপাতালে বর্ষার লাশ রেখে গেছে। যা হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ রয়েছে। বর্ষার লাশের ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।
ইউএইচ/
Leave a reply