মধ্যপ্রাচ্যে অন্য কোনো শক্তিকে প্রভাব বিস্তার করতে দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (১৬ জুলাই) উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট, জিসিসির সম্মেলনে যোগ দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ হুঁশিয়ারি দেন। বাইডেন জানান, অঞ্চলটির সাথে সম্পৃক্ত থাকবে তার দেশ, চীন-ইরান বা রাশিয়াকে কাছে ঘেঁষার কোনো সুযোগ দেয়া হবে না। সম্মেলনে অন্যান্য আঞ্চলিক সংকটগুলো তুলে ধরে সমাধানের আহ্বান জানান আরব নেতারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরসূচির সবশেষে ছিল আরব দেশগুলোর সাথে সম্মেলন। শনিবারের বৈঠকে উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট, জিসিসির ৬ সদস্যরাষ্ট্র ছাড়াও যোগ দেন জডার্ন, মিসর, ইরাকের নেতারা। আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন ছিল আলোচনার মূল ইস্যু।
সেখানে বাইডেন প্রতিশ্রুতি দেন, আঞ্চলিক সম্প্রীতিতে প্রবেশের সুযোগ পাবে না ইরান-চীন-রাশিয়ার মতো ‘বিতর্কিত’ পরাশক্তি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট। শতভাগ সক্ষমতা নিয়ে অঞ্চলটির কল্যাণে নিযুক্ত থাকবো আমরা। আমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবসম্মত-শতভাগ কেন্দ্রীভূত এবং পূরণযোগ্য। অঞ্চলটিতে অন্যান্য বিশ্বশক্তি প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। কারণ, লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা একযোগে পথ চলবো। চীন-রাশিয়া-ইরানের জন্য ঢুকে পড়ার মতো কোন ফাঁকা জায়গা রাখা হবে না।
তবে স্বাগতিক দেশ সৌদি আরবের প্রস্তাব আন্তর্জাতিক আইন মেনে চললে উন্নয়নের স্রোতে যোগ দিতে পারে ইরানও। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, আরব দেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সহযোগিতামূলক সম্পর্কের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং উন্নয়নে ইরানকেও যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। সেক্ষেত্রে দেশটিকে আন্তর্জাতিক আইন মানতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে নাক গলানো যাবে না, পাশাপাশি পরমাণু শক্তি সংস্থাকে করতে হবে সর্বোচ্চ সহায়তা।
ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনের মতো দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক সংকটগুলোও তুলে ধরেন নেতারা। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল সিসি বলেন, আরবদের কল্যাণই সম্মেলনের মূল এজেন্ডা হওয়া উচিৎ। আন্তর্জাতিক বিধিমালা মেনে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান চাই। ১৯৭৬ সালের সীমান্ত আইন মোতাবেক ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র, যার রাজধানী জেরুজালেম। ফিলিস্তিনিরা যেন পূর্ণ স্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারে সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
কাতারের আমির শেখ হামাদ আল থানি সম্মেলনে বলেন, ইয়েমেনের বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে অস্ত্রবিরতি সত্যিই স্বস্তিদায়ক। সেটি কার্যকরে সৌদি আরবের উদ্যোগও প্রশংসনীয়। কার্যকর কোনো সমাধানে না পৌঁছানো পর্যন্ত সেটি বহাল রাখার অনুরোধ রইলো। এর মধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত মানার পাশাপাশি জাতীয় সংলাপে বসবে ইয়েমেন এমনটাও প্রত্যাশা করেন তিনি।
জেদ্দায় ওই সম্মেলনের পেছনে বাইডেনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল আরব বিশ্বের সাথে ইসরায়েলকে একীভূত করা। তবে ঐতিহাসিক আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে রিয়াদ। যার অধীনে ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয় ইসরায়েলের। তাছাড়া ইরানের বিরুদ্ধে আরব বিশ্বের যৌথ পদক্ষেপকেও উৎসাহিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
/এডব্লিউ
Leave a reply