ময়মনসিংহ ব্যুরো:
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মৃত মায়ের পেট থেকে অলৌকিকভাবে জন্ম নেয়া সেই নবজাতকের অবস্থার অবনতি হয়নি। তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য সোমবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তার চিকিৎসায় ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর শিশুটি ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি ছিল। নবজাতকের চিকিৎসা করছিলেন কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান।
তিনি জানান, জন্মের পর শিশুদের জন্ডিস হয়ে থাকে। নবজাতকের রক্তে উচ্চ বিলিরুবিন মাত্রার কারণে এ জন্ডিস হয়। ৬০ শতাংশ পূর্ণ গর্ভকাল নবজাতকের এবং ৮০ শতাংশ প্রি-টার্ম অর্থাৎ অকালজাত নবজাতকের মধ্যে প্রথম সপ্তাহে জন্ডিস দেখা যায়। তবে এর বেশির ভাগই নির্দোষ জন্ডিস, যাকে ফিজিওলজিক্যাল জন্ডিস বলে। কোনো ওষুধ ছাড়াই এটি ভালো হয়। তাই সুরক্ষার জন্য তাকে ফটোথেরাপি দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চিকিৎসক ফটোথেরাপি দেয়ার জন্য পরামর্শ দিলে তাকে সোমবার সন্ধ্যায়ই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালেই রাখা হয়েছে নবজাতককে।
শিশুটির চিকিৎসায় ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড কমিটির প্রধান করা হয়েছে হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. তোফাজ্জল হোসেন এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।
ডা. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জন্ডিসের সমস্যাটি জটিল নয়। এমনটি হয়েই থাকে। তিনি জানান, শিশুটির শরীরে রক্ত কম। তাই ৫০ এম এল রক্ত দেয়া হয়েছে। বলেন, গর্ভকালীন সময়ে নাড়ি কাটার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। তাই হয়তো শরীরে রক্তের পরিমাণ কম ছিল। সাথে শ্বাসকষ্টও ছিল। কোনো ধরনের ইনফেকশন হয়েছে কিনা তা জানতে কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হচ্ছে। ভাঙা হাতের অবস্থার অবনতি হয়নি। শরীরের ভেতরে আরও কোথাও কোনো আঘাত আছে কিনা তার জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হবে। শিশুটির নিরাপত্তার জন্যই হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ)-তে রাখা হয়েছে।
জেডআই/
Leave a reply