বিপাকে স্থানীয় হ্যান্ডসেট নির্মাণ শিল্প, বাড়ছে মোবাইল ফোনের দাম

|

মোবাইল ফোনের স্থানীয় হ্যান্ডসেট নির্মাণ শিল্প এখন সঙ্কটে। ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি এবং স্তরে স্তরে ভ্যাট আরোপের নেতিবাচক প্রভাবে বেচাকেনায় ধস নেমেছে। আর এর সুযোগ নিচ্ছে চোরাকারবারীরা। তাদের দখলে এখন বাজারের ৪০ শতাংশ। এতে প্রতি মাসে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে দেড়শো কোটি টাকার বেশি। সঙ্কট উত্তরণে ভ্যাট আরোপের পরিমাণ কমিয়ে আনার তাগিদ দিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বলছেন, এনইআইআরের প্রকল্প দ্রুত কার্যকর করতে হবে।

মূলত বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ এনে বিশ্বমানের মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেট তৈরি হচ্ছে দেশেই। এরই মধ্যে এই উদ্যোগ বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের মন জয় করেছে। তবে গত কয়েক মাসে ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় হ্যান্ডসেটের উৎপাদন খরচ বেড়েছে ১৫ শতাংশের বেশি। ক্রেতা পর্যায়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় ৪০ শতাংশের বেশি বিক্রি কমেছে। এ নিয়ে স্যামসাং হ্যান্ডসেট নির্মাতা ফেয়ার গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন জানান, ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরে এই সময়ের তুলনায় এ বছর ২০-৩০ শতাংশ দাম বেড়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে ৩০-৩৫ শতাংশ ডাউনট্রেন্ড আছে বলেও জানান তিনি।

উদ্যোক্তারা বলছেন, ডলারের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি স্তরে স্তরে ভ্যাট আরোপের ফলে প্রতিটি স্মার্টফোনের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। আর এই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোরাকারবারী সিন্ডিকেট। চারমাসে চোরাকারবারীরা ৪০ শতাংশ বাজার দখলে নিয়েছে।

দেশে বছরে হ্যান্ডসেটের বাজার প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে আরও দু’হাজার কোটি টাকার বাজার সবসময় লাগেজ পার্টির দখলে থাকে। নতুন করে ৪০ শতাংশ বা ৪ হাজার কোটি টাকার বাজার দখলে নেয়ায় এখন প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার হ্যান্ডসেট রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বাজারে প্রবেশ করছে। এতে প্রতি মাসে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি প্রায় দেড়শো কোটি টাকা। স্থানীয় শিল্প টিকিয়ে রাখতে ভ্যাট ব্যবস্থার সংস্কার চান উদ্যোক্তারা।

ফেয়ার গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে আমরা যে কয়টি ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি করেছি তাদের যাতে সেল পড়ে না যায় সেজন্য ফ্যাক্টরি পর্যায়ে যে ৫ শতাংশ মূসক ছিল, সেটিকে আরও ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ শতাংশের মধ্যে রাখা দরকার।

এদিকে, চোরাকারবারীদের দাপট কমাতে গত বছরে জুলাইতে ‘ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার বা এনইআইআর কার্যকম চালু করে বিটিআরসি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেসময় অবৈধ কারবারীদের বাজার সংকুচিত হয়ে ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা রহস্যজনক কারণে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে এনইআইআর কার্যক্রম বন্ধ করে দিলে ফের চাঙ্গা হয়ে অবৈধ হ্যান্ডসেটের কারবারীরা।

স্মার্ট ও ফিচার ফোন মিলিয়ে দেশে প্রতিবছর হ্যান্ডসেটে চাহিদা সাড়ে তিন কোটি পিস। যারমধ্যে স্মার্টফোনের চাহিদা ৯০ লাখের কিছু বেশি। চাহিদার ৭০ শতাংশ নির্মাণ হচ্ছে স্থানীয় ১৪টি কারখানায়।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply