‘আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করছিস, এখন হয়রানি হ’, আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও মামলার বাদী

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর:

আদালতে মানহানির মামলায় হাজিরা দিতে যাওয়া যমুনা টেলিভিশনের গাইবান্ধা করেসপনডেন্ট জিল্লুর রহমান পলাশসহ ৫ সাংবাদিককে আদালত চত্বরে গালিগালাজ করেছেন ওই মামলার বাদী সুন্দরগঞ্জের সাবেক পিআইও নুরন্নবী সরকার। এসময় তিনি সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকিও দেন।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ক্যান্টিনের সামনে আদালতের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।

পলাশসহ পাঁচ সাংবাদিকের আইনজীবী ফরহাদ হোসেন জানান, আদালত ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় রংপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরা দিতে আসেন সাংবাদিকরা। বিচারক না থাকায় মামলার পরের তারিখ হয় ৩১ অক্টোবর। সাংবাদিকরা সেখানে কাজ শেষ করে নিচে নামলে মামলার বাদী পিআইও নুরুন্নবী সরকার পলাশসহ অন্যান্যদের অত্যন্ত অশ্লীল ও উল্লেখের অযোগ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এসময় তিনি পলাশের প্রতি মারমুখো হয়ে পড়েন। উচ্চস্বরে হাত ও আঙ্গুল উঁচিয়ে তাকে বলেন, তোকে এবার মজা দেখাবো। আমার ১২০ বান্ডিল টিনকে ৫০০ বান্ডিল বানিয়ে রিপোর্ট করেছিস। এখন আদালতে এসে হয়রানি হ।

পরে সেখানে উপস্থিত আইনজীবী ও কোর্ট পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়। এ ঘটনায় পলাশসহ সাংবাদিকরা মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় জিডি করেছেন।

পলাশের আইনজীবী আরও জানান, একজন সরকারি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আদালতকে সম্মান রেখে হাজিরা দিতে আসা সাংবাদিকদের যেভাবে গালিগালাজ করেছেন এবং হুমকি দিয়েছে এটি শিষ্টাচারবিরুদ্ধ এবং ফৌজদারি অপরাধ। যে সরকারি কর্মকর্তা কোর্টের বারান্দায় কাউকে এভাবে গালিগালাজ ও হুমকি দিতে পারেন, তার পক্ষে বড় ধরনের ক্ষতি করা সম্ভব। যেহেতু জিডি করা হয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।

যমুনা টেলিভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশ বলেন, আমি তার দুর্নীতির সচিত্র একাধিক প্রতিবেদন করেছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন। আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আমিসহ অন্যান্যরা নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছি। তবে বাদী পিআইও নুরুন্নবী যেভাবে আদালতের বারান্দায় আমাদের ওপর হামলে পড়েছেন, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

তবে ঘটনা অস্বীকার করেছেন সুন্দরগঞ্জের সাবেক পিআইও নুরুন্নবী সরকার। তার দাবি, ওই সাংবাদিকরাই তার ওপর চড়াও হয়েছেন। এমনকি তিনি সেখানে কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করেননি বলেও দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সাবেক পিআইও’র অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যমুনা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রচার ও প্রকাশের কারণে ২০১৯ সালে যমুনার প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশসহ কালের কণ্ঠের সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি মামুনুর রশিদ, ভোরের দর্পণের সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি শামসুল হক, দৈনিক সুন্দরগঞ্জের প্রতিনিধি আবু জাহিদ কারী এবং মানবাধিকার কর্মী মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে রংপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি পৃথক মামলা করেন তিনি। আজ মামলাটির চার্জ গঠন শুনানির দিন ছিল।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply