আমেরিকায় পড়ালেখা করে, বাংলাদেশে মাদক বিজ্ঞানী হতে চেয়েছিল এক যুবক। কানাডা- আমেরিকা থেকে নতুন নতুন মাদকের বীজ এনে নিজের ফ্ল্যাটে চাষ করে আসছিলেন ওনাইসী সাঈদ। অভিজাত এলাকায় বিক্রি করতো দামি এসব মাদক। র্যাবের অভিযানে সাঈদের বাসা থেকে এক্সট্যাসি, কুশ, হেম্প, মলি, ফেন্টানিলসহ নতুন নতুন মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসায় ছোট ছোট গ্রীন হাউজ। নানা ধরনের গাছে চারা ও সরঞ্জাম দেখলে মনে হবে কৃষি নিয়ে কেউ হয়তো গবেষণা করছে। কিন্তু গবেষণা হচ্ছে ঠিকই, তবে তা কৃষির নয়; ভয়াবহ মাদকের জন্য। তাপ নিয়ন্ত্রক গ্রো-টেন্টের মধ্যে ফুলের টবে লাগানো হয়েছে উত্তর আমেরিকায় প্রচলিত মাদক কুশ।
কুশ ছাড়াও ওই ফ্ল্যাট থেকে র্যাব উদ্ধার করেছে এক্সট্যাসি, হেম্প নামের মাদক। মলি, এডারল, ফেন্টানিলও পাওয়া গেছে ওই বাসায়। পশ্চিমা দেশে এসব সংমিশ্রণে তৈরি হতো ভয়াবহ মাদক। বাসায় চারা রোপণ করে ভয়াবহ মাদকের চাষ করে আসছিল ওনাইসী সাঈদ। ধনী পরিবারের এই সন্তান কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে আমেরিকায় পড়তে যায়। সেখান থেকেই মূলত নতুন নতুন মাদক সম্পর্কে ধারণা নেয়। ২০১৪ সালে দেশে এসে সেসব ধারণার বাস্তবায়ন শুরু করে সাঈদ। নিজে মাদকাসক্ত না হয়েও সাইদের পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশে গড়ে তুলবে নতুন নতুন মাদকের ফার্ম।
র্যাবের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মাদক সেবনের বেশকিছু জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছেন সাঈদ। বিভিন্ন বই তিনি অধ্যয়ন করেছেন। মাদক বিজ্ঞানী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। উনি বিশ্লেষণ করে দেখতেন যে, অভিজাত শ্রেণির যারা বিভিন্ন পার্টিতে যায় তাদের কাছে কোন ধরনের মাদক আগ্রহ তৈরি করবে। এই জন্যই আপনারা দেখবেন, বেশ কয়েক ধরনের মাদক অল্প পরিমাণে আছে। আমরা জানতে পেরেছি ফেন্টানিল আফিমের চেয়ে ৫০-১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী।
আমেরিকা-কানাডা থেকে মাদকের বীজসহ বিভিন্ন কাচামাল কুরিয়ারে করে দেশে আনতো সাঈদ। মাদক প্রস্তুত হলে অভিজাত এলাকায় সরবরাহ করতো নিজেই। তার গ্রাহকরা অধিকাংশই দেশের বনেদী পরিবারের। সাইদের বাসা থেকে মাদক ছাড়াও নগদ আড়াই কোটি টাকা ও অর্ধলক্ষাধিক ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, সাঈদ এসব মাদকের বীজ ইন্টারন্যাশনাল কুরিয়ারের মাধ্যমে আনাতো। তাছাড়া দেশের বাইরে গেলে নিজের সাথেও নিয়ে আসতো। সে মাসে ৫০ পিস এক্সট্যাসি বিক্রি করতো।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, সাঈদের এমন অভিনব মাদক কারবার সর্ম্পকে কিছুই জানতো না তার পরিবার। এক সময় বাবার গার্মেন্টস ব্যবসা ছেড়ে মাদক ব্যবসা শুরু করেন সাঈদ। র্যাব জানিয়েছে, সাঈদের কিছু সহযোগীর তথ্যও পাওয়া গেছে।
/এম ই
Leave a reply