যে পদক্ষেপের কারণে ইইউ-যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনার মুখে ইসরায়েল

|

আল হকের অফিসের সামনে প্রেস কনফারেন্স। ছবি: সংগৃহীত

রাতের অন্ধকারে রামাল্লার গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনায় ইসরায়েলি বাহিনী চালায় সাঁড়াশি অভিযান। ফিলিস্তিনের ৭টি মানবাধিকার সংগঠন ও এনজিও ছিল সেনাবহরের টার্গেট। ভাঙচুর চালিয়ে, স্পর্শকাতর নথিপত্র তছনছ করে ঝুলিয়ে দেয় তালা। নোটিশ সেঁটে দেয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার।

হয়রানির শিকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠন ‘আল হক’। রয়েছে বন্দিদের উপদেষ্টা হিসেবে তৎপর আদ্দামির, ইউনিয়ন অব প্যালেস্টাইনি উইমেন্স কমিটি, এগ্রিকালচারাল ওয়ার্ক কমিটি এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিশান সেন্টার।

ইসরায়েলের অভিযোগ, সেক্যুলার-বামপন্থি মুভমেন্ট ‘লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন’-কে ইন্ধন যোগায় এসব এনজিও। দেয়, অস্ত্র কেনার জন্য অর্থ সহযোগিতা। স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির বিরুদ্ধে রয়েছে বেশকিছু হামলা চালানোর অভিযোগ। অবশ্য, ফিলিস্তিন সরকার এবং আইনজীবীরা বলেছেন, জোরপূর্বক মুখ বন্ধ করতেই এ কৌশল।

ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ স্টায়া বলেছেন, ইসরায়েলকে টেনেহিঁচড়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নেয়ার জন্য মানবাধিকার সংগঠন ‘আল হক’ একাই যথেষ্ট। তারা যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য। বিশ্ববাসীর সামনে ইসরায়েলের মুখোশ খুলে যাবে; সেই আতঙ্ক থেকেই চালানো হয়েছে অভিযান।

আল হকের আইনজীবী মাইকেল ফার্ড বলেছেন, তল্লাশি অভিযানের নামে সংগঠনগুলোর ওপর রীতিমতো হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সরকার। এটাই বড় প্রমাণ যে পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও পূর্ব জেরুজালেমে কোন ধরনের দখলদারিত্ব চালানো হয়। এখনও যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিশ্চুপ থাকে; তাহলে সেটা ফিলিস্তিনের জন্য বড় হুমকি।

অধিকার রক্ষায় নিয়োজিত সংগঠনগুলোর সমর্থনে রাজপথে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিরা। রামাল্লা ও নাবলুসে দিনভর ছিল শক্ত অবস্থান। তাদের দাবি, অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নেয়া হচ্ছে মুক্তবাক চর্চার অধিকার। এ ব্যাপারে সংহতি প্রকাশ করেছে ইইউ।

ফিলিস্তিনে নিযুক্ত ইইউ প্রতিনিধি ভেন কুন ভন বার্গসডর্ফ বলেন, নিপীড়নের শিকার মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ করলো ইইউ। কারণ, তারা বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় অসাধারণ কাজ করে। শুধু ইসরায়েলি দখলদার নয় বরং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং হামাসের কার্যকলাপকেও তারা ছাড় দেয় না।

এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বরাবরের মতোই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ঘটনা খতিয়ে দেখার। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানিয়েছেন, পশ্চিম তীরের ৭টি ফিলিস্তিনি এনজিও বন্ধ করার ঘটনায় গভীর উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে ইসরায়েলি প্রশাসনের কী বক্তব্য, সেটি প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করছে জেরুজালেমের মার্কিন দূতাবাস। কারণ, বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে তৎপর সুশীল সমাজ। সুতরাং, তাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না।

সূত্র: রয়টার্স।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply