গাঁজার পেছনে টাইসনের মাসে খরচ ৩৮ লাখ টাকা; ধুঁকছেন হুইলচেয়ারে

|

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি এয়ারপোর্টে হুইলচেয়ারে বসে চলতে দেখা গেছে কিংবদন্তি বক্সার মাইক টাইসনকে। কয়েকদিন আগে নিউইয়র্কেও লাঠিতে ভর দিয়ে চলতে দেখা যায় তাকে। চিকিৎসকরা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত গাঁজা সেবনের কারণেই তার এমন অবস্থা। গাঁজা সেবনের পেছনে মাসে ৩৮ লাখ টাকা খরচ করেন সাবেক এই বক্সার। খবর ফার্স্টপোস্টের।

সর্বকালের অন্যতম সেরা হেভিওয়েট বক্সার হিসেবে বিবেচনা করা হয় মাইক টাইসনকে। ৫৮টি লড়াইয়ের মধ্যে ৫০টিতেই জয় পান টাইসন। তবে তার দাপটকে প্রকাশ করে একটি তথ্য; ৫০টি জয়ের মধ্যে ৪৪টিই এসেছে নক আউটে! বিদ্যুৎগতির রিফ্লেক্স ও শক্তিশালী ফিস্টের কারণে এককালে তিনি পরিচিত ছিলেন আয়রন ম্যান হিসেবে। ধর্ষণ মামলায় জেল হওয়ার পর তাকে আখ্যা দেয়া হয় ‘দ্য ব্যাডেস্ট ম্যান’। বক্সিং রিংয়ে হলিফিল্ডের কান কামড়ে দেয়া থেকে শুরু করে তার পোষা বাঘের হামলায় ক্ষতবিক্ষত হওয়া তরুণী; কিংবা বিমানে ভক্তের উপর বিরক্ত হয়ে একের পর এক ঘুষি। টাইসনের কার্যকলাপ বরাবরই তাকে করেছে খবরের শিরোনাম। তবে এবারে শিরোনামে এলেন ভিন্ন এক টাইসন।

এবার ৫৬ বছর বয়সী এই বক্সারকে দেখা গিয়েছে আমেরিকার মায়ামি এয়ারপোর্টে। সঙ্গী হুইলচেয়ার। একটি লাঠিও জড়িয়ে রেখেছিলেন কাঁধে। দেখে বোঝাই যাচ্ছে, হুইলচেয়ার ছাড়া এখন আর চলতে পারেন না কিংবদন্তি এই বক্সার। কয়েকদিন আগে নিউইয়র্কেও টাইসনকে দেখা গেছে লাঠিতে ভর দিয়ে চলতে। চিকিৎসকরা বলছে, মাত্রাতিরিক্ত গাঁজা সেবনের কারণেই তার এমন অবস্থা।

১৯৮৬ সালে ট্রেভর বারবিককে হারিয়ে সবচেয়ে কম বয়সে হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নের টাইটেল জেতেন টাইসন। ২০০৫ সালে কেভিন ম্যাকব্রাইডের কাছে হেরে অবসরে যান তিনি। টাইসন তার ক্যারিয়ারে আয় করেছিলেন পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে একসময় দেউলিয়া হতে বসেছিলেন তিনি। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বেছে নেন মাদক ব্যবসা। ২০১৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় গাঁজা বৈধতা পেলে তিনি গড়ে তোলেন গাঁজা চাষের কোম্পানি ‘টাইসন র‍্যাঞ্চ’। বাড়তে থাকে মাদকের প্রতি তার আকর্ষণ। ক্যালিফোর্নিয়ায় ৪২০ একর জমিতে গাঁজা চাষ শুরু করেন তিনি। প্রতি মাসে গাঁজা বিক্রি করে আয় করেন ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা। আর গাঁজা সেবনের পেছনে মাসে খরচ করেন বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৮ লাখ টাকা। নিজেকে দাবি করেন সেরা গাঁজা প্রস্তুতকারক হিসেবে।

https://twitter.com/i/status/1551087541104701442

তবে নিজের সময় শেষ হয়ে আসছে, এমনটি নাকি মনে হচ্ছে টাইসনের। মায়ামি এয়ারপোর্টে এই কিংবদন্তি বক্সারের হুইলচেয়ারের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেট জুড়ে। ভক্তরা তাকে জানিয়েছেন শুভ কামনা। দ্রুত যেন সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন টাইসন, তেমনটি কামনা করে রিটুইট করেছেন অনেকেই। তবে হটবক্সিং উইথ মাইক টাইসন পডকাস্টে তিনি বলেন, একদিন আমরা সবাই মারা যাবো। আয়নায় নিজের দিকে যখন তাকাই, আর মুখের ওপর অসংখ্য দাগ দৃষ্টিগোচর হয় তখন বলে উঠি, বাহ! আমার চলে যাওয়ার দিন খুব দ্রুত চলে আসছে।

সম্প্রতি দক্ষিণী সুপারস্টার বিজয় দেভেরাকোন্ডার ‘লাইগার’ ছবিতে এই বক্সিং কিংবদন্তির কাজ করার ব্যাপারে শোনা গেছে। এই ছবিতে মাইক টাইসনের ক্যামিও রোলের কথা শুনে রীতিমতো নাকি চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন বিজয়ের মা। নির্মাতাকে ফোন করে বলেছিলেন, ছেলেকে দেখে রাখতে। তবে সেই টাইসনকেই এখন দেখে রাখতে হয়তো অন্য কাউকে প্রয়োজন পড়ছে।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply