ভিউ বাড়াতে সাড়ে ১১ ঘণ্টা কবরে! দুইভাইয়ের ঠিকানা হলো কারাগার

|

কবর থেকে বের হওয়ার সময় উৎসুক জনতার প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করছেন ইউটিউবার মিজানুর রহমান রনি (২৪)।

বগুড়া ব্যুরো:

ইউটিউব চ্যানেলের ভিউ আর রিচ বাড়বে, তাই ছোট ভাই কবর খুঁড়ে তার ভেতরে শুয়ে-বসে ভিডিও করেছেন সাড়ে ১১ ঘণ্টা! এ সময়টাতে বসে ছিলেন না তার সহোদর বড় ভাই! আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখা কবরের বাইরের দৃশ্যপট ভিডিও করেছেন তিনি। দুই ভাইয়ের ইচ্ছে ছিলো, টানা ২৪ ঘণ্টা এক ভাই ভিতরের দৃশ্য ধারণ করবেন, আর বাকিজন বাইরে পরিস্থিতির ভিডিও ধারণ করবেন। দুই ক্যামেরার ফুটেজ মিলিয়ে বানিয়ে ফেলবেন ’গা ছমছম করা’ একটি ইউটিউব ভিডিও। তবে সাড়ে ১১ ঘণ্টার মাথায় তাদের এই ’কাণ্ড’ শেষ করতে হয়েছে এলাকাবাসীর শোরগোল আর পুলিশের হস্তক্ষেপে।

সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে কবর থেকে ছোট ভাইকে উঠিয়ে বড় ভাইসহ দুই ভাইকেই থানায় নিয়ে যায়, বগুড়ার শাজাহানপুর থানা পুলিশ। উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা আবু হাসান (২৮) ও মিজানুর রহমান রনি (২৪) কে আটকে পর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় সন্ধ্যায় আদালতে নেয়া হলে, তাদের দুই ভাইকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম যমুনা নিউজকে জানান, বড়ভাই হাসান এবং ছোট ভাই রনি মিলে রোববার (২১ আগস্ট) বাড়ির উঠানে কবর খোড়েন। রাত ১১টার দিকে রনি পানি এবং শুকনো কিছু খাবার নিয়ে কবরে নেমে যান। বাইরে থেকে বাতাস প্রবেশের পাইপ রেখে তাকে মাটিচাপা দেন বড় ভাই হাসান।

কবরে বাতাস চলাচলের জন্য রাখা হয়েছিলো ফ্যান।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাত ১১টা পর্যন্ত রনি কবরের ভেতরের পরিবেশ এবং হাসান বাইরে থেকে ওপরের পরিবেশের দৃশ্য ধারণ করবেন; এমন পরিকল্পনা ছিলো দুজনের। কিন্তু সোমবার সকালেই স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে থানায় খবর দিলে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে ওই কবর থেকে রনিকে সুস্থ্ অবস্থায় উদ্ধার করে।

কবর থেকে উঠে আসার আগেও এলাকায় ‘ইউটিউবার’ হিসেবে পরিচিত রনি তার হাতে থাকা ক্যামেরা দিয়ে উৎসুক জনতার ভিডিও ধারণ করছিলেন। পরে তাদের দুইভাইকেই প্রথমে থানায় এবং সন্ধ্যায় সেখান থেকে আদালতে নেয়া হয়। আদালতে তারা দুজন ‘আগামীতে এমন ইউটিউব ভিডিও বানাবেন না’ উল্লেখ করে মুচলেকা দিলেও, আদালত হাসান ও রনিকে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply