মাকে হত্যার পর ঘরেই পুঁতে রাখেন লাশ, ছেলে গ্রেফতার

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর:

রংপুরে ষাটোর্ধ এক মাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘরের মেঝেতে লাশ পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।

এলাকাবাসীর হাতে আটক হওয়ার সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে পুলিশ বলছে, টাকা পয়সা নিয়ে বিরোধের জেরে বড় ভাইয়ের নির্দেশে মাকে হত্যা করেছে ছোট ভাই। তবে আটকের সময় উপস্থিত অনেকেই বলেছেন, প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদে মায়ের নামে তোলা কিস্তির টাকা পরিশোধ না করতেই বড় ভাই লোক পাঠিয়ে মাকে হত্যা করার দাবি করেছিল আটক ছোট ভাই।

রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার সি সার্কেল আশরাফুল আলম পলাশ জানান, কাউনিয়ার চর নাজিরদহ এলাকার লালমিয়ার স্ত্রী ষাটোর্ধ জমিলা খাতুনের খোঁজ মিলছিল না ২০ আগস্ট থেকে। পরিচিত এক নারী মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় তাকে খুঁজতে গিয়ে দেখেন শোয়ার ঘরে মেঝে নতুনভাবে নিকানো। সন্দেহ হলে গ্রামের আরও কয়েকজনকে নিয়ে মাটি খুঁড়ে দেখতে পায় সেখানে পচে যাওয়া লাশ। এবং লাশটি জমিলা খাতুনের নিশ্চিত করেন তারা। সাথে সাথে এলাকাবাসী ছেলে জামিলকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।

পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম পলাশ আরও জানান, খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হই আামিসহ কাউনিয়া থানা পুলিশ ও সিআইডির টিম। আলামত সংগ্রহ শেষে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ২টাই লাশ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রয়োজনীয় কার্যাদি শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, এলাকাবাসী যখন তাকে আটক করে তখন এবং পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টাকা পয়সা নিয়ে বিরোধের জেরে নিজেই মাকে গামছা দিয়ে শ্বাস রোধে হত্যার পর শয়নঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখার কথা জানিয়েছে জামিল। তবে তার কথার পাশাপাশি এ ঘটনায় আরও অন্য কেউ জড়িত কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

এদিকে স্থানীয় দফাদার মঞ্জিল হোসেন জানান, জামিল পরে এলাকাবাসী ও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মাকে মেরে ফেললে আর কিস্তি দেয়া লাগবে না, লোকজন জব্দও করবে না- বড় ভাইয়ের এই ধরনের কথা ও আদেশে নিজেই মাকে হত্যা করে মেঝেতে পুঁতে রাখে। সেই ঘরেই ৫ দিন থেকে স্বাভাবিকভাবে বসবাসও করে জামিল।

এলাকাবাসী জানায়, এত বড় একটি ঘটনা ঘটলেও জামিলকে স্বাভাবিক দেখা গেছে গত পাঁচদিন। যে ঘরে মাকে পুঁতে রাখা হয় সেই ঘরেই রান্নাবান্নাও করে খেয়েছে জামিল। জামিন নেশা করার কারণে মাস তিনেক আগে তার স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে গেছেন। ওই পাঁচদিনেও জামিল ছাগল চড়ানোসহ সব কাজকর্ম করেছে। এত বড় একটি ঘটনা ঘটিয়ে জামিল কীভাবে এত স্বাভাবিক থাকলো এবং এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে বের করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত নির্মম। জামিল টাকা পয়সার বিষয়টি নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের দাবি করলেও এর সাথে অন্য কেউ জড়িত কিনা সেটি পুলিশ তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। তিনি দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের ফাঁসির দাবি জানান।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply