রোহিঙ্গা সংকটের ৫ বছর; কাউকে ফেরত নেয়নি মিয়ানমার

|

মাহফুজ মিশু:

২৫ আগস্ট, ২০১৭। প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে সাত লাখের মতো মানুষ। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। তারপর দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক; কোনো উদ্যোগই কাজে আসেনি। পাঁচ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। বরং পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোহিঙ্গার সংখ্যা। এ অবস্থায় প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি ক্যাম্পে জন্মনিয়ন্ত্রণ কীভাবে করা যায়, সেদিকেও নজর দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিকভাবে টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও চলতি বছরই প্রত্যাবাসন শুরুর আশা পররাষ্ট্র সচিবের।

এরমধ্যে ২০১৯ সালে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নেয় চীন। তাতেও কাজের কাজ হয়নি। মিয়ানমারের শর্তানুযায়ী কয়েক হাজার রোহিঙ্গাদের তালিকা করে নেইপিদো পাঠায় ঢাকা। তাদেরও ফিরিয়ে নেয়ার কোনো উদ্যোগ নেই। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা সংকট যে সহসা কাটছে না, তা নিশ্চিত। বরং, রাশিয়া-ইউক্রেন বা চীন-তাইওয়ান উত্তেজনায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর যেন এই ইস্যু থেকে হারিয়ে না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকা জরুরি।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসনে সুযোগ খুব একটা তৈরি হয়েছে বলে আমি মনে করি না। এই সমস্যাটা আরও অনেকদিন থাকবে বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক মহলে টিকিয়ে রাখাও দুরূহ হয়ে যাচ্ছে। এখন নতুন নতুন সমস্যা আসছে।

বন্ধুরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় কয়েক লাখ মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে রোহিঙ্গারা ভীষণ অসচেতন হওয়ায় বছরে ত্রিশ হাজার করে বাড়ছে তাদের সংখ্যা। পাশাপাশি ক্যাম্পগুলোতে বেড়েছে নানা রকম সহিংসতা।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, প্রতি বছর ৩০ হাজার করে বাড়ছে। তাতে ৪ বছর ধরলেও আরও ১ লাখের বেশি যুক্ত হয়েছে।

এরইমধ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে গাম্বিয়ার আন্তর্জাতিক আদালতে চলছে অং সাং সুচিসহ দেশটির সেনা কর্মকর্তাদের বিচার। তারপরও দেশটির সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা অনেক দেশ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বড় বড় কথা বলেন, ব্যবসাপাতি তো তুঙ্গে। মিয়ানমার তো ব্যবসার মধ্যে রয়েছে। তারা (পশ্চিমা দেশ) যদি একটু সজ্ঞান হতেন, মানবাধিকারের প্রতি একটু ভক্তি থাকতো, অনুরাগ থাকতো; তাহলে যারা এথনিক ক্লিনজিং করেছে তাদের সাথে ব্যবসা করতো না।

রাখাইনে টেকসই পরিবেশ বিশেষ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘসহ প্রভাবশালী দেশগুলোর আন্তরিক উদ্যোগ চায় বাংলাদেশ।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply