পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে পানের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ও বিশুদ্ধ পানি হিসেবে বিবেচনা করা হয় বৃষ্টির পানিকে। নানাভাবে আমরা বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করি এবং পানসহ বিভিন্ন কাজে লাগাই। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বের কোনো প্রান্তেই বৃষ্টির পানি আর পানের জন্য উপযোগী নেই। খবর ইউএসএ টুডের।
সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন। এ নিয়ে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে। এই গবেষণা দলে ছিলেন স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়ান কাসিনস।
গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর সকল স্থানের বৃষ্টির পানিতে পিএফএএস নামের একটি ক্ষতিকর রাসায়নিক পাওয়া গেছে। বৃষ্টির পানিতে এর আগেও কিছু পরিমাণ পিএফএএস রাসায়নিক ছিল। তবে এখন তা গ্রহণযোগ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
মজার বিষয় হলো এই পিএফএএস রাসায়নিক মোটেই প্রাকৃতিক নয়। বৃষ্টির পানিকে দূষিত করে ফেলার জন্য একমাত্র মানবজাতিই দায়ী। পিএফএএস মূলত এমন একটি রাসায়নিক যা সহজে নষ্ট হয় না। সাধারণত নন স্টিক কড়াই, প্যাকেজিং, শ্যাম্পু ও মেকআপে এই রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। এটি সম্পূর্ণভাবে একটি কৃত্রিম উপাদান। এখন অধিক মাত্রায় এর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় তা পানি ও বাতাসেও মিশে গেছে। প্রকৃতির সাথে বিপুল পরিমাণে এই রাসায়নিক মিশে যাওয়ায় বৃষ্টির পানিতেও এর মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে।
এ নিয়ে বিস্তৃত একটি গবেষণা করেছেন স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে। এই গবেষণা দলে ছিলেন স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়ান কাসিনস। তিনি গবেষণাপত্রটি লিখেছেন। এনিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, আমরা যে মাত্রা নির্ধারণ করেছি, সেই অনুসারে পৃথিবীর কোনো অঞ্চলের বৃষ্টির পানি এখন আর নিরাপদ নয়।
গবেষণাটি করার জন্য ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, পিএফএএস শরীরে একবার প্রবেশ করলে আর বেরোতে পারে না। রাসায়নিকটি এতোটাই ক্ষতিকর যে, এটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় সরাসরি প্রভাব ফেলে। সে ক্ষেত্রে কোনো টিকাও কাজ করে না। এ ছাড়া নারীর গর্ভধারণের ক্ষমতা, শিশুর বেড়ে ওঠার হার ধীর করে দেয়া, স্থূলতা, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি ও বিভিন্ন ক্যানসারের জন্যও দায়ী এই রাসায়নিক। তাই বৃষ্টির পানি পান না করার জন্য আহ্বান করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই সাথে এই রাসায়নিক ব্যবহারে লাগাম টানার ব্যপারেও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এসজেড/
Leave a reply