পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ, গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার!

|

নিহত শফি আলম।

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের মাতামুহুরী নদী থেকে শফি আলম নামের এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ-ইউপি সদস্য ও চৌকিদারের ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়ার চল্লিশ ঘণ্টা পর নদী থেকে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, ইউপি সদস্য ও চৌকিদার মিলে শফি আলমকে বেঁধে মারধরের পর নদীতে ফেলে দিয়ে পরে পুলিশকে বিভ্রান্ত করেছে। নিহত শফি আলম চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডর শীতারখিল এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী শীতারখিল এলাকায় ৭-৮ জন যুবক জুয়া খেলছে, স্থানীয় মেম্বার এনামুল হকের কাছ থেকে এমন খবর পেয়ে অভিযানে যায় তারা। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন যুবক পালিয়ে যায় এবং তিনজন যুবক নদীতে ঝাঁপ দেয়। ওই তিনজনের মধ্যে দুই যুবক সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও শফি আলম নামে এক যুবক নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় নিহতের বোন বাদী হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাটিকে রহস্যজনক উল্লেখ করে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানায় পুলিশ।

এদিকে, রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে মাতামুহুরী নদীর কন্যার কুম থেকে নিখোঁজ শফি আলমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনদের দাবী ওই সময় মরদেহের গলায় রশি পেঁচানো ছিল। অবশ্য সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা মাতামুহুরী তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আসাদুজ্জান জানান, গলায় নয়, থুতনিতে রশি পেঁচানো ছিল শফি আলমের।

শফি আলমকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তার ভাই পুতু আলম বলেন, আমার ভাই ব্যবসা করতেন। ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার এনামুল হকের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। তাকে হত্যার পর এনামুল হক জুয়া খেলার কথা বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করেছে।
ইউপি সদস্য এনামুল হক ও চৌকিদার কামাল মিলে গলায় রশি দিয়ে ও মারধর করে শনিবার সকালের দিকে তার লাশ মাতামুহুরী নদীতে ফেলে দেন বলে অভিযোগ তার।

তবে এ বিষয়ে ইউপি সদস্য এনামুল হক বলেন, শফি আলম খুব ভালো ছেলে ছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তার একটা বদ-অভ্যাস আছে, সে নিয়মিত জুয়া খেলতো। স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে পুলিশের মাধ্যমে তাদের জুয়া খেলা বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, শফি আলমের পরিবারের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে শফি আলমের পরিবারকে দিয়ে এসব বলাচ্ছে।

এ বিষয়ে মাতামুহুরী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply