উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়নের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ

|

উইঘুরের মুসলিমদের ওপর মারাত্মক নিপীড়ন চালিয়েছে চীন। জাতিসংঘ ৪৫ পৃষ্ঠার এক দীর্ঘ প্রতিবেদনে বলে, এমন তথ্যেরে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে তারা। বহুল প্রতীক্ষিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, উইঘুরে সংখ্যালঘু বন্দিদের ওপর যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতনের পাশাপাশি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে জন্মনিয়ন্ত্রণ নীতি। একে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধও বলছে ওই প্রতিবেদন। তবে এই প্রতিবেদনকে পশ্চিমা শক্তির সাজানো প্রহসন বলে পাল্টা দাবি করেছে বেইজিং।

বুধবার (৩১ আগস্ট) জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিমদের ওপর চালানো নির্যাতনের বিস্তারিত পর্যালোচনা নিয়ে বহুল প্রতীক্ষিত ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের শেষ কর্মদিবসে প্রকাশিত হয় প্রতিবেদনটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়নের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে তদন্তকারীরা, যা সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ করতে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ব্যাবহার করছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে উইঘুর মুসলিমদের বিচারবহির্ভুত আটক করে করা রাখা হচ্ছে, চালানো হচ্ছে যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন। জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণের নীতি।

তবে কত মানুষকে সরকার আটক করেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় জাতিসংঘ। চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াংয়ের শিবিরগুলোতে ১০ লাখের বেশি মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। দ্রুত তাদের মুক্তির আহ্বানও জানানো হয় প্রতিবেদনে।

জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজি মাতসুনো প্রতিবেতদন বিষয়ে বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন আমাদের কাছে স্পষ্ট করেছে, জিনজিয়াংয়ে কী ভয়াবহ নিপীড়ন চলছে। এটা নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন জাপান। উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে তা এখনই বন্ধ করতে হবে।

এর আগে প্রতিবেদনটি প্রকাশ না করার আহ্বান জানিয়েছিল চীন। জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনকে পশ্চিমা প্রহসন বলে আখ্যা দেয় বেইজিং। চীনে নিযুক্ত জাতিসংঘের প্রতিনিধি ঝ্যাং জুন প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায়র বলেন, তথাকথিত এই প্রতিবেদন মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। চীনের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করতেই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানান।

জিনজিয়াংয়ে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি উইঘুর মানুষের বসবাস, যাদের অধিকাংশই মুসলিম। এর আগে জিনজিয়াংয়ের মুসলিমদের ওপর চীনের নিপীড়নকে গণহত্যা বলে আখ্যা দিয়েছিল কয়েকটি দেশ।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply