বাইশ গজে দাঁড়িয়ে নাজিবুল্লাহ জাদরান যখন বাংলাদেশি বোলারদের বল একের পর এক সীমানা ছাড়া করছিলেন, ঠিক তখনই সীমানা পেরিয়ে গ্যালারিতে বসা এক বৃদ্ধা উল্লাসে ফেটে পড়ছিলেন। তার নাম গুলপারি শাফি, বয়স ৭৫। আজমান শহরে বাস করা এই বৃদ্ধা ভুগছেন মরণব্যাধি ক্যান্সারে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) ম্যাচের দিন সকালে দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে কেমোথেরাপি নিয়েছেন তিনি। থেরাপি শেষে শারীরিক অক্ষমতা, ক্লান্তি, অসুস্থতা সব ভুলে ছেলে খাইবারকে গুলপারি বলে উঠলেন, ‘চল, খেলা দেখে আসি।’ মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে দ্রুতই গাড়ি বের করেন খাইবার। চলে আসেন শারজায়। অসুস্থ মায়ের যাতে কষ্ট না হয় তাই অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে যোগাড় করেন ভিআইপি বক্সের টিকিট।
হুইল চেয়ারে বসে খেলা দেখেছেন গুলপারি শাফি। কখনো গরমে ঘেমেছেন, কখনো আবেগে কেঁদেছেন। খেলার শুরুতে আফগানিস্তানের যখন জাতীয় সঙ্গীত চলছিলো তখন হাতে আফগানিস্তানের পতাকা নিয়ে চোখের জলে ভেসেছেন এই ক্রিকেটপ্রেমী বৃদ্ধা।
আফগানিস্তানের সব খেলোয়াড়কেই ভালোবাসেন শাফি। তবে সবচেয়ে বেশি পছন্দ অধিনায়ক নবীকে। পশতু ও খাইবার ভাষার মিশেলে গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘মোহাম্মদ নবী খুব ভালো খেলোয়াড় এবং মানুষ হিসেবেও খুব বিনয়ী।’
ম্যাচের পর ক্যান্সার আক্রান্ত গুলপারি শাফির কাছে ছুটে গিয়েছেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীও। যা এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ প্রশংসা পেয়েছে।
বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান। ম্যাচ জয়ের সেই খুশি চওড়া হাসিতে বুঝিয়েছেন ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকা গুলপারি শাফি। কোটি কোটি টাকা যা না পারে, তা পারে ভালোবাসা। সেই ভালোবাসায় হাসছে আফগানদের ক্রিকেট। হয়তো ক্যান্সারকেও জয় করে একদিন এভাবেই হেসে উঠবেন গুলপারি।
https://twitter.com/i/status/1564695650683523077
জেডআই/
Leave a reply