একসময়ের ব্যাপক নিন্দিত ক্যামিলাই এখন রানি, কতটুকু মানতে পারবে ব্রিটিশ জনগণ?

|

ছবি: সংগৃহীত।

একসময় ব্রিটেনজুড়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিন্দিত ক্যামিলাই এখন ব্রিটেনের নতুন রানি। ভবিষ্যৎ রানি হিসেবে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তার বিচ্ছেদ আর মৃত্যু তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করেছিল ক্যামিলাকে। ডায়ানার জায়গায় সেই ক্যামিলাই পরলেন রানির মুকুট। এখন প্রশ্ন হলো, রানি হিসেবে ক্যামিলাকে কতটুকু মেনে নিতে পারবেন ব্রিটিশ জনগণ? যদিও সময়ের পরিক্রমায় ক্যামিলার ওপর ক্ষোভ অনেকটাই কমে এসেছে সাধারণ মানুষের। খবর টাইমসের।

মূলত, রাজপরিবারের সদস্য হওয়ার কথাই ছিল না ক্যামিলার। রাজা তৃতীয় চার্লস ও ক্যামিলা দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তবে সব সমালোচনা ও সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে পেছনে ফেলে ১৭ বছর ধরে সংসার করছেন চার্লস ও ক্যামিলা। যদিও দুজনের পরিচয়টা আরও কয়েক দশক পুরনো।

জানা যায়, প্রথম দেখায় তৎকালীন ব্রিটিশ রাজপুত্র ক্যামিলার প্রেমে পড়েছিলেন। তবে তার সে প্রেম পূর্ণতা পায়নি। তরুণ চার্লস ১৯৭২ সালে নেভিতে চাকরির করার সুবাদে ৮ মাসের জন্য বিদেশে পাড়ি জমান। আর তখনই অ্যান্ড্রু পার্কার বোলসের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ক্যামিলা। সে ঘরে দু’টি সন্তানও আছে নতুন রানির।

১৯৮১ সালে ডায়ানাকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন চার্লস। অল্প সময়েই ব্রিটিশদের মন জয় করেন নেন প্রিন্সেস ডায়ানা। ব্রিটেনের সীমানা ছাড়িয়ে ডায়ানার জনপ্রিয়তা পৌঁছে যায় সমস্ত বিশ্বে। তবে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে পারলেও স্বামীর মনে জায়গা পাননি তিনি। বিয়ের দু’দিন আগে ক্যামিলার জন্য চার্লসের বানানো ব্রেসলেট নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই দ্বন্দ্বের অবশেষে সমাপ্তি হয় ১৯৯৬ সালে বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে। এর এক বছর আগে বিচ্ছেদ হয়েছিল ক্যামিলারও। বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে ডায়ানা বলেছিলেন, চার্লসের কাছে কখনোই ডিভোর্স চাননি তিনি। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত প্রথমে নেন বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসই।

প্রিন্সেস ডায়ানার ঘর ভাঙার জন্য অনেকেই দায়ি করেন ক্যামিলাকে। এর এক বছরের মাথায় লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়া ডায়ানার মৃত্যুতে ক্যামিলার প্রতি ব্রিটিশদের ক্ষোভ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। জনসম্মুখে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে তাকে। মিডিয়াও ছাড় দেয়নি ক্যামিলাকে। তার চরিত্র আর চেহারা নিয়ে বহুবার নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে হাল ছেড়ে দেননি নতুন রানি। বিরূপ এ পরিস্থিতির সাথেই একসময় মানিয়ে নিয়েছেন নিজেই।

এরপর ২০০৫ সালে প্রিন্স অব ওয়েলসকে বিয়ে করলেও ডায়ানার জায়গায় অনেকেই তাকে ভাবতে পারেননি। সাধারণ মানুষের পুরোপুরি গ্রহণযোগ্যতা আদায় করতে না পারলেও ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন রানির প্রিয় পাত্র। জনসম্মুখে রানির সাথে প্রায় সব আয়োজনেই দেখা গেছে হাস্যোজ্জ্বল ক্যামিলাকে।

২৫ বছর পেরোলেও এখনও মানুষের হৃদয়ে রয়ে গেছেন প্রিন্সেস ডায়ানা। তবে এই দীর্ঘ সময়ে ক্যামিলার প্রতিও ক্ষোভ কমেছে অনেকের। প্রিন্সেস হিসেবে দক্ষ হাতে সামলেছেন নিন্দা আর সমালোচনার ঝড়। কুইন কনসোর্ট হিসেবে নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে এখন তিনি।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply