ভোটাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন আছে: গণতন্ত্র দিবসে বিশিষ্টজনদের মত

|

গণতন্ত্র ও উন্নয়ন নিয়ে কী বিতর্ক চলে? বিশিষ্টজনেরা বলছেন, গণতন্ত্র না থাকলে টেকসই হয় না উন্নয়ন। ব্যক্তির অধিকার ও জীবনমান উন্নয়ন সমান্তরালে এগিয়ে যায়। দেশে ভোটাধিকার, গণমাধ্যম ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন আছে তাদের।

গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ের আগুন ছিল নূর হোসেনের বুকে পিঠে; ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী গণ অভুত্থানের সেই আগুন কতটা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে গণতন্ত্র?

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকরণ থেকে আমরা বহুগুণ পিছিয়ে গেছি। নূর হোসেনদের যে আত্মাহুতি, সেখান থেকে আমরা বহু পিছিয়ে। উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নের মধ্যে শুধু অবকাঠামো থাকলে হবে না।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, নূর হোসেন একজন নাগরিক ছিলেন। তিনি জীবন দিলেন গণতন্ত্রের জন্য। সভ্যসমাজে যদি গণতন্ত্র না থাকে, সে সমাজে বসবাস করা অর্থহীন।

নূর হোসেনের মতো সারাবিশ্বে গণতন্ত্রের লড়াইয়ে শহীদ হয়েছেন লাখো মানবসন্তান। তাদের আত্মহুতির পথ ধরে জাতিসংঘ ২০০৭ সালে চালু করে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস; যা পালিত হয় ১৫ সেপ্টেম্বর। দিবসটি চালুর সময় বাংলাদেশে ছিল সেনা সমর্থিত অনির্বাচিত সরকার। উৎসবমুখর ভোটে বিপুল বিজয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে দলটির অধীনে পরপর দুইটি জাতীয় নির্বাচনে প্রশ্ন উঠেছে ভোটাধিকার নিয়ে।

এ প্রসঙ্গে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনী ব্যবস্থাটা প্রশ্নবিদ্ধ। ভোট দিতে কতজন মানুষ যায়, সেই হারটাও নিম্নমূখী।

অন্যদিকে, অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মানুষকে ভোট দেয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেভাবেই সরকার, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দল— সবারই উচিত হবে জনগণের ভোটের অধিকার যেন রক্ষা পায়।

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

শুধু ভোটের মাধ্যমে একদিনের গণতন্ত্র নয়; বিশিষ্টজনদের প্রশ্ন আছে জনসেবা বিবেচনা করে প্রশাসন, আইন ও বিচারবিভাগ পরিচালনা নিয়েও। এক্ষেত্রে শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দলের দায় দেখেন তারা।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গণতন্ত্রের লড়াই যদি হয়, শুধু ক্ষমতার লড়াই। তাহলে জনগণ তো দর্শক। প্রশাসনের মধ্যে জবাবদিহিতা স্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা নিয়েও বড় একটা ইস্যু রয়েছে। প্রশাসনে প্রতিটা অঙ্গই মনে করে, আমিই রাজা।

অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শেখ হাসিনা প্রশাসন গণতন্ত্র ও উন্নয়ন দুটিকেই একসাথে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন তারা। সেখানে কিছু ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে। কিন্তু লক্ষ্যটা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের পরিপূরক হলেও ডিজিটাল নিরাপত্তাসহ কিছু আইন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্টজনেরা।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply