স্টাফ করেসপনডেন্ট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এককভাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। ফলে চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াই আর হচ্ছে না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন। বিরোধী দল নির্বাচনে না থাকায় আওয়ামী লীগের নেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী। তাই একতরফা নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে তেমন কোনো আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনসহ আরও কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র উত্তোলন করলেও তিনজন প্রার্থী শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। তারা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সামিউল হক লিটন ও গোমস্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম বাচ্চু।
এর আগে, বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাধার মুখে ফরম তুলতে পারেননি রাণীহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দুরুল হোদা।
তার অভিযোগ, চেয়ারম্যান পদে মনোয়নপত্র উত্তোলন করতে আসলে সরকার দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা তার ব্যাংড্রাফটসহ অন্যান্য কাগজপত্র ছিনতাই করে তাকে সেখান থেকে বের করে দিয়েছে। ফলে জীবনের নিরাপত্তার আশঙ্কায় শেষ দিন মনোনয়নপত্র উত্তোলন বা জমা দিতে যাননি তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে জেলা নির্বাচন অফিসে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় কয়েকজন প্রার্থী সেখানে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গেলে পুলিশের সামনেই তাদের বেধড়ক পিটিয়ে বের করে দেয় সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা। এতে জেলা নির্বাচন অফিস চত্ত্বর ও আশপাশের এলাকায় বিশৃঙ্খলা ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, বৃহস্পরিবার সকাল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের সামনেই প্রতিটি প্রবেশকারীকে তল্লাশী পর জেলা নির্বাচন অফিসে প্রবেশ করতে দেয়। এ সময় পুলিশকে নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এদিকে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হতেই বিজয়-উল্লাস করে সেখানে থাকা সরকারী দলের নেতা-কর্মীরা।
মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা প্রদানের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রুহুল আমিন বলেন, এ ধরনের কোনো বিষয় আমার জানা নেই। এখানে সবারই আসার অধিকার আছে, সবাই আসতে পারে। কেউ ঢুকতে দিবে না এটা তো কোনো কথা না।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান তার কার্যালয়ে ছাত্রলীগের অবস্থান ও মনোনয়নপত্র জমাকারীদের তল্লাশির বিষয়ে বলেন, তাকে কেউ অভিযোগ না করায় তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তাছাড়া একবার সাংবাদিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশকে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেন বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষে দিনে নির্ধারিত সময়ের শেষে চেয়ারম্যান পদে ১ জন, সংরক্ষিত দুইটি ওয়ার্ডে ৬ জন এবং ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, গতকাল ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে একজন প্রার্থী মনোনয়পত্র জমা না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি এবং বাকি দুইজন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিতে আসেননি বলে জানান তিনি।
/এসএইচ
Leave a reply