স্টাফ করেসপনডেন্ট, কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামের এতিমখানাগুলোয় যে সংখ্যা দেখিয়ে বরাদ্দ নেয়া হচ্ছে, বাস্তবে আশ্রয়ী শিশুর সংখ্যা তার চেয়ে অনেক কম। ভুয়া কাগজপত্র, এতিম ও দুস্থ শিশু দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। বছরের পর বছর রাষ্ট্রীয় অর্থ লোপাটের এই মহোৎসব চললেও ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের। বরং তাদের বিরুদ্ধেই আছে যোগসাজশের অভিযোগ।
কুড়িগ্রামে ৮ উপজেলায় নিবন্ধিত বেসরকারি ২১টি এতিমখানায় আশ্রয়ী ২ হাজার ৭২ জন। এর মধ্যে সরকারি সুযোগ সুবিধাভোগী ৯২৬ শিক্ষার্থী। এসব এতিম শিশুদের জন্য খাদ্য, চিকিৎসা ও পোশাক বাবদ প্রতিমাসে জনপ্রতি দু’হাজার করে টাকা দেয় সরকার।
নাগেশ্বরী উপজেলার সমশের আলী শিশু সদনে কাগজে কলমে ৫০ জন দেখিয়ে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ নিলেও এতিম মাত্র ৩৫ জন। রৌমারীর টাপুরচর দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানায় ১০০ জনের জন্য বরাদ্দ ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা হলেও সেখানে খাবার পায় ১৮ শিশু। প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো এতিম। বায়তুল ক্বারার গোলাম হাবিব শিশু সদনে ৭০ জনের জন্য ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও রান্না হয় ৩৫ জনের। উলিপুরে জুম্মাহাট হাফিজিয়া কারিয়ানা মাদ্রাসা আদর্শ এতিমখানায় ৫৪ জনের জন্য ১২ লাখ ২৪ হাজার টাকা বরাদ্দ আসলেও উপস্থিত পাওয়া যায় ৩৫ শিশুকে। এভাবে সবকয়টি এতিমখানায় কাগজ কলমে শিশুর সংখ্যা শতভাগ ঠিক রাখা হলেও সরেজমিনের সাথে কোনো মিল নেই।
বিধি মোতাবেক এতিমখানায় ন্যূনতম ১০ জন নিবাসী থাকতে হবে; সেই শর্ত পূরণ করতে পারছে না কোনো প্রতিষ্ঠান। তার ওপর আছে মানসম্মত ও পুষ্টিকর খাবারের অভাব।
কুড়িগ্রাম সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রোকোনুল ইসলাম অনিয়মের কথা স্বীকার করেন করে বলেন, ফুলবাড়ি, নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী, সদরসহ বেশ কয়েকটি এতিমখানায় অনিয়ম আছে। তার উপরেও এতিম শিশুর ৮-১০ করে বেশি দেখানোর জন্য সচিবের পিএস লুকাস কিবরিয়া এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের চাপ রয়েছে।
জেডআই/
Leave a reply