দেশে মাদক নিয়ে কত টাকার বাণিজ্য হয়, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে তা অনুসন্ধান করার পরামর্শ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত মাদকাসক্তি নিরাময়ে বেসরকারি খাতের ভূমিকা শীর্ষক গোলটেবিল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ৬০ থেকে ৭০ লাখ মাদকাসক্ত। এজন্য ভালো হাসপাতাল নেই। আমাদের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে অভিজ্ঞ ডাক্তার নাই, সাইকিয়াটিস্ট নাই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনি জেলখানায় গিয়ে দেখুন মাদকের মামলায় পুলিশের সদস্য যেমন আছে, র্যাবের সদস্যও আছে, তেমন অন্য ব্যবসায়ীরাও রয়েছে। পুলিশ বলে তার জন্য আইন আলাদা হবে বিষয়টি এমন নয়। যেসব পুলিশ সদস্যরা মাদক নেয় তাদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। টেস্টে পজিটিভ হলে তাকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, চাকরির শুরুতে যারা সিলেক্টেড হবে তাদেরকে ডোপ টেস্ট করার প্রচলন পুরোপুরি নিতে যাচ্ছি। পুলিশ, বিজিবি সব জায়গায় ডোপ টেস্টের প্রচলন রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হচ্ছে কিনা, প্রয়োজন বোধে এক্ষেত্রেও টেস্টের প্রচলন শুরু করার কথাও ভাবছেন তারা। এই জায়গাটাতে সরকার খুব কঠিন অবস্থানে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সারাদেশে জেলখানার ক্যাপাসিটি আছে ৪১ হাজারের বেশি। কিছুদিনের মধ্যে এটা আরও বাড়বে। কিন্তু সব সময়ই জেলখানাগুলোতে ৮০ লাখের বেশি বন্দি থাকে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই মাদক ব্যবসায়ী।
তবে বিচারের সময় সাক্ষী পাওয়া যায় না। লম্বা জট লেগে গেছে মামলার। সেখানে এই মাদক মামলা হারিয়ে যায়। আমরা মাদক মামলার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চেয়েছিলাম, যদিও তা এখনও পাইনি। যদি শাস্তিটা দৃশ্যমান হতো তাহলে ডিমান্ড হ্রাস ও সাপ্লাই কমে যেতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মাদকের চাহিদা হ্রাস করতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে যে স্বপ্ন দেখছি, এই যে আমাদের উন্নয়ন, তার সব বরবাদ হয়ে যাবে যদি মাদকের ভয়াবহতা থেকে আমাদের ভব্যিষৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না পারি।
এসময় বেসরকারি খাতে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র চালুর জন্য সরকারিভাবে সহায়তা করার আশ্বাসও দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
/এডব্লিউ
Leave a reply