অতিরিক্ত যাত্রী বহনই কি নৌকাডুবিতে হতাহতের একমাত্র কারণ?

|

মোটাদাগে অতিরিক্ত যাত্রী বহনকেই পঞ্চগড়ের নৌকাডুবির কারণ বলা হলেও এর পেছনে ব্যাপক বালু উত্তোলন এবং অপরিকল্পিত খননকেও দায়ী করেছেন এলাকাবাসী। গভীরতা বেশি হওয়ায় শিশু এবং নারীর মৃত্যু বেশি হয়েছে বলে মনে করেন তারা। যদিও ফায়ার সার্ভিস এবং তদন্ত কমিটি বলছে সব বিষয় ধরেই চলছে তদন্ত।

আউলিয়া ঘাটের করতোয়ায় যখন ডুবছিল নৌকাটি, তখন নারীরা তাদের শিশু সন্তানদের হাতে নিয়ে বাঁচার আকুতিতে চিৎকার করছিলেন। একে অপরকে ধরে রাখা এবং বেশিরভাগ নারী সাঁতার না জানায় মৃতের সংখ্যাটা বেশ ভারী। এলাকাবাসী জানায়, তারা এখানে আগে নৌকাডুবিতে কখনোই মানুষ নিহতের ঘটনা ঘটেনি। পানি বেড়ে যাওয়াই হতাহতের প্রধান কারণ। দিনাজপুর জোনের ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হক বলেন, নৌকাতে যেহেতু ছোট বাচ্চা এবং নারী বেশি ছিল, তাই নিখোঁজ বেশি হয়েছে তারাই।

শুধু অতিরিক্ত যাত্রী বহনকেই দুর্ঘটনায় একমাত্র কারণ মনে করেন না স্থানীয়রা। নির্দয়ভাবে করতোয়া থেকে বালু উত্তোলন এবং অপরিকল্পিত ড্রেজিংকেও দায়ী করছেন তারা। বলছেন, নির্বিচারে বালু তোলায় পানির নিচে তৈরি হয়েছে অনেক গর্ত। ফলে নৌকাডুবিতে বেশিরভাগ যাত্রীই গেছেন তলিয়ে। দীর্ঘদিনের ব্রিজ নির্মাণের দাবি পূরণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তারা বলেন, ড্রেজার দিয়ে মাটি তুলে, পাথর তুলে, শালকাঠ তুলে বালু তোলা হচ্ছে। এমনটা না হলে অনেক মানুষের জীবন বাঁচতো। ব্রিজ নির্মাণ যেন দ্রুত সম্পন্ন হয়, সে জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছে এলাকাবাসী।

সবকিছুকেই প্রাধান্য দিয়ে তদন্তের কথা বলছে ফায়ার সার্ভিস, প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং তদন্ত কমিটি প্রধান দীপঙ্কর রায় বলেছেন, ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক। তারা ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছেন। ৩ দিন পর তারা রিপোর্ট দেবেন।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (এডমিন) কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, আমরাও এখানে এমন কিছু আশা করিনি। এখানে নৌকা পরিবহনকারী কর্তৃপক্ষ যাত্রী বোঝাই করে চলাচল করবে, এমনটাও প্রত্যাশিত নয়।

আউলিয়া ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রত্যাশা এই পথ দিয়ে চলাচলকারীদের। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, এই ব্রিজ এখন ডিজাইনের পর্যায়ে আছে। ডিজাইন হয়ে গেলে টেন্ডারে যাবে। এবং এই ব্রিজের বিশেষত্ব হলো, এটা ‘ওয়াই’ (Y) ধরনের ব্রিজ হবে।

আরও পড়ুন: লাশের সংখ্যা বাড়ছেই, করতোয়া ট্রাজেডিতে নিহত ৫৯

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply