‘২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আটক করলে জেলখানায় বসে বসে পরিকল্পনা করেছিলাম। ক্ষমতার ধারাবাহিকতার কারণেই উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। সব কাজ পরিকল্পনা মাফিক করার কারণেই সফলতা দৃশ্যমান।’ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কোভিড-১৯ এসে অগ্রযাত্রাকে খানিকটা বাধাগ্রস্ত করেছে বলে উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেই কিছু বিষয় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। তবে সব বাধা কাটিয়েই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীদেরও সমান অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে বলে তিনি সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন।
বিএনপির নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান জানতে চায় ভয়েস অব আমেরিকা। জবাবে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আর কোনো সুযোগ নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, আইনের মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। তারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। সেখানে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ শাসনামলের নানা অর্জন তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করছে। অভ্যুত্থান বা জোর করে ক্ষমতা দখল এখন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গণতন্ত্র রক্ষায় এ আইন করেছে বাংলাদেশ।
সাক্ষাৎকারে উঠে আসে রোহিঙ্গা ইস্যুও। প্রধানমন্ত্রী জানান, ঘনবসতি দেশে এতো মানুষের আশ্রয় দিয়ে দীর্ঘদিন রাখা, এটা এখন বড় ধরনের চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন থাকার ফলে কক্সবাজারের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সেজন্য তাদের এখন নিজ দেশে ফেরত যাওয়া দরকার। আন্তর্জাতিক মহলকে আমরা বারবার করে অনুরোধ করেছি। এ অবস্থায় নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া সম্ভব না। রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের ভেতর মাদক ব্যবসা, মানব পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোটা ব্যবস্থা তুলে দিলেও প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হয়ে কর্মক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিচ্ছে এ দেশের মেয়েরা।
মতপ্রকাশের ব্যাপারে তিনি বলেন, টক-শোতে সব কথা বলার পর কেউ যদি বলে যে কথা বলতে দেয়া হয়নি, সেখানে আপনি কী বলবেন?
গুম-খুনের অভিযোগের ব্যাপারেও প্রশ্ন করে ভয়েস অব আমেরিকা। প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশে গুম-খুনের যে অভিযোগগুলো আছে সেগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আপনার সরকার কী চিন্তা-ভাবনা করছে?
শেখ হাসিনা জবাব দেন, আমাদের একটা মানবাধিকার কমিশন আছে। তারা কিন্তু তদন্ত করছে। যখন আমরা তালিকা চাইলাম, তখন ৭০ জনের একটা তালিকা দেয়া হলো। সেখানে দেখা গেল বেশিরভাগই বিএনপির অ্যাকটিভিস্ট, তারা মিছিল করছে। অনেকে ব্যক্তিগত কারণে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না, এজন্য নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। মারা গেছে এমন সাতজনের তথ্য পাওয়া গেছে। আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘন না, আমরা মানবাধিকার সংরক্ষণ করেছি।
/এমএন
Leave a reply