তুচ্ছ ঘটনা থেকে টেঁটা-বল্লম যুদ্ধ, প্রাণহানি। এরপর মামলা, জীবিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা। দেশের অনেকের কাছে হাসাহাসির বিষয়ে পরিণত হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকটি উপজেলায় কিছু পরিবারকে চরম বিপদগ্রস্ত করেছে এই সামাজিক দাঙ্গা।
কবে টেঁটা-বল্লমের এই নিষ্ঠুর ব্যবহার শুরু হয়েছে, তা বলতে না পারলেও ইতিহাসবিদরা বলছেন, অন্তত পাঁচ দশক ধরে দেখা যাচ্ছে এর ভয়াবহতা। পুলিশ বলছে, এসব সংঘর্ষে নেপথ্য থেকে উসকানি দেয় তৃতীয় পক্ষ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কয়েকটি উপজেলায় টেঁটাযুদ্ধে প্রাণ গেছে সাধারণ মানুষ থেকে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা থেকে খেটে খাওয়া দিনমজুরের।
সরাইলের সাবেক ইউপি সদস্য রকেট মেম্বারকে বছর দুয়েক আগে টেঁটা দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। ওই ঘটনায় মামলা করে এখন উল্টো জীবনহানির শংকায় স্বজনরা।
মামলার বাদী ও নিহত রকেট মেম্বারের ছেলে শাহনেওয়াজ রনি বলেন, আসামিপক্ষ বিচার কাজে অনেক প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। কোর্টে গেলে তারা হুমকি দেয়। এমনকি হত্যার হুমকিও দিচ্ছে।
সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্যের স্বামী, সরাইল আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল আজাদেকও জীবন দিতে হয় টেঁটাযুদ্ধে।
সামাজিক দাঙ্গায় কবে থেকে টেঁটা-বল্লমের ব্যবহার তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না জেলার ইতিহাসবিদ। জানালেন, গেলো পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে টেঁটাযুদ্ধ।
ইতিহাস বিশারদ ও কবি জয়দুল হোসেন বলেন, দুই গ্রামের মধ্যে অনেক হামলা ও মারামারি হয়। আমরা অনেক আগে থেকেই দেখে আসছি এটা। পঞ্চাশ বছর আগেও যেমন ছিল এখনো তেমন আছে।
পুলিশ বলছে, এসব সংঘর্ষে নেপথ্য থেকে উসকানি দেয় তৃতীয় পক্ষ। আর তাতেই গোষ্ঠীগত দাঙ্গা চলতে থাকে বছরের পর বছর।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যেসব মানুষ বাহিরে থেকে এসব সংঘর্ষে অর্থায়ন করতো তারা এখন উপলব্ধি করছে যে কাজগুলো ভুল ছিল। এসব সংঘাত বন্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
/এনএএস
Leave a reply