খরচ কমাতে চায় সরকার, ব্যয়ের হিসাব চেয়ে সব মন্ত্রণালয়কে অর্থবিভাগের চিঠি

|

বছরের শেষ সময়ে এসে সাধারণত সরকারের অর্থ ব্যয়ে তোড়জোড় দেখা যায়। অর্থবছরের শুরুতে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নও তেমন গতি পায় না। রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রেও সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না এ সময়ে। তবে এমন অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে বাজেট বাস্তবায়নে শৃঙ্খলা আনতে চায় সরকার। তাই আয়-ব্যয় এবং বাস্তবায়ন পরিকল্পনা জানতে চেয়ে সব মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে অর্থবিভাগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, শুরুতেই আয়-ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করা গেলে বাজেট বাস্তবায়ন বাড়ানো সম্ভব।

জানা গেছে, এরইমধ্যে সব মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে করণীয় জানতে চেয়েছে অর্থবিভাগ। অর্থবছরের প্রথমার্ধে বাজেট বাস্তবায়নে ধীরগতি দৃশ্যমান বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। আয় কমে যাওয়ায় ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মেরামত সংরক্ষণ, নির্মাণ ও পূর্ত এবং মালামাল কেনা এবং সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অর্থবছরের শেষ দিকে পদক্ষেপ নেয়া হয়। ফলে সরকারের গুণগতমান নিশ্চিত করা যায় না। তাই প্রত্যেক প্রান্তিক শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলেছে অর্থবিভাগ।

এ নিয়ে, অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, একটা বছরের বাজেট হওয়ার পর সেটার আর আইনগত তদারকি থাকে না। বিশেষ করে প্রকল্পের ক্ষেত্রে তদারকির ব্যবস্থা করা গেলে যে টাকাটা অবশিষ্ট থাকবে সেটা ব্যয়ের জন্য কেউ আর দৌড়াদৌড়ি করবে না, একটা নির্দিষ্ট হিসাব থাকেব। ফলে যেকোনো উপায়ে টাকাটা ব্যয় করার প্রবণতা আর থাকবে না।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্যহীনতার মূল কারণ রাজস্ব আয় এবং সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সুষ্ঠ পরিকল্পনা না থাকা। বলা হচ্ছে, আগাম পরিকল্পনা গ্রহণ করা গেলে সরকারি ঋণ এড়ানো এবং ঋণজনিত ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব। বৈশ্বিক নানান সংকটে বাজেট ব্যবস্থাপনা সতর্কতার বিকল্প নেই বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রতিবছর কত আয় হবে সেটার একটা ধারণা করতে পারি আমরা, সে‌ই পরিমাণ আয় নাও হতে পারে। আবার আয় হলেও নানা কারণে সেটা ব্যয় নাও হতে পারে। ফলে প্রতিবছরই একটা দুঃশ্চিন্তা থাকে। তবে এবারে আরও বাড়তি চাপ আছে।

সরকার উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয়ের কৃচ্ছতার পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। সেক্ষেত্রে জনগণের প্রতিটি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যয়ের ব্যাপারে আমরা কর্তন নয় সবধানতা চাই। কথায় কথায় বড় সেমিনার, ভোজ, বড় বড় গাড়ি আমদানি করা ও এসি সারাদিন চালিয়ে রাখার মতো ছোট ছোট ব্যয়ই সম্মিলিতভাবে বড় আকার ধারণ করে। তাই এসব ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এতে আমাদেরই টাকা বাঁচতে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply