মূল্যস্ফীতির হার ১১ বছরে সর্বোচ্চ

|

১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছে মূল্যস্ফীতির হার। অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকের হার এখন ৯ ভাগের বেশি। বৈশ্বিক সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণেই চড়ছে মূল্যস্ফীতির পারদ। এতে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে। সহসাই এই হার কমার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমানতালে মজুরি না বাড়ায় চাপের মুখে পড়ছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ।

পণ্যের প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি দামে কেনার অর্থই মূল্যস্ফীতি। আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে তৈরি হচ্ছে বড় ধরনের পার্থক্য। পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাকে বাড়তি পরিশোধ করতে হচ্ছে ৯ টাকার বেশি। গত সেপ্টেম্বর মাসের সরকারি হিসেব তাই বলছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ১ ভাগ। যা গেল ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমন পরিস্থিতি দেখে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, সহসাই সাধারণ পর্যায়ের, অর্থাৎ ৫ থেকে ৬ ভাগ মূল্যস্ফীতিতে ফেরার সম্ভাবনা কম। সাধারণ মানুষের আয় ও ব্যয়ের পার্থক্য আরও বেশকিছুদিন থাকবে বলে মনে হচ্ছে।

মাসভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসে ক্রমান্বয়ে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির সূচক। জুলাই থেকেই সূচকে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা যায়। মূলত বৈশ্বিক সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণেই এই শোচনীয় অবস্থা। সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, শুধু দরিদ্ররাই নয়, সীমিত বা নির্দিষ্ট আয়ের মানুষেরাও এই খাদ্য অনিরাপত্তা পরিস্থিতির শিকার। সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচিতে তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

মূল্যস্ফীতির এমন ঊর্ধ্বগতিতে বেসামাল অবস্থার মুখে বিশ্বের অন্যান্য দেশও। নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের মধ্যে ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধির কৌশল হাতে নিয়েছে কেউ কেউ। তবে এই পন্থা কতোটুকু টেকসই? বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের পরামর্শক ড. জাহিদ হোসেন বলছেন, সুদের হার না বাড়ালে মূল্যস্ফীতি কমবে না। আর মূল্যস্ফীতি কমানো হলে অর্থাৎ সুদ বাড়ানো হলে মন্দার আশঙ্কাও তৈরি হতে পারে। এই উভয় সংকটে কোনটাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তা করার বিষয় রয়েছে। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতি ঠেকানোই প্রকৃত ব্যবস্থাপনা।

অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার কৌশল খুঁজছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলছেন, দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে, তাদের জীবনমান ধরে রাখতে পারলে হয়তো পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

এদিকে, বৈশ্বিক মন্দার হাত থেকে সুরক্ষার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply