বৈশ্বিক সংকটের দায় কার? ‘রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাবও রয়েছে’

|

নানামুখী নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে চাপে ফেলতে গিয়ে তবে কী গোটা বিশ্বকেই বিপাকে ফেললো যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা? ইউরোপসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশই ধুঁকছে জ্বালানি ও অর্থনৈতিক সংকটে।

চলমান সংকটের জন্য ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পাশাপাশি মস্কোর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকেও দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। বলছেন, ওয়াশিংটনের একগুয়েমি সিদ্ধান্তের ফল ভোগ করতে হচ্ছে বিশ্বকে। খবর সিসিটিভি প্লাস, রয়টার্স ও এপি’র।

ইউরোপের বাজারে গত ফেব্রুয়ারির পর গ্যাসের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। এতে ভোক্তা পর্যায়ে বাড়ে বিদ্যুতের দাম। কেবল গ্যাস নয়, দাম বেড়েছে কয়লারও। পূর্বে বুলগেরিয়া থেকে পশ্চিমে আয়ারল্যান্ড, জ্বালানি ব্যয়ের ভার সামলাতে গিয়ে এখন ধুঁকছে ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশই।

এ অবস্থায় জাতিসংঘ-আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক শোনাচ্ছে মন্দার শঙ্কা। প্রশ্ন উঠেছে, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তার জন্য কি এককভাবে শুধু রাশিয়াই দায়ী? বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে রুশ আগ্রাসন যেমন এই সংকট সৃষ্টি করেছে, তেমনি অন্যদিকে বৈশ্বিক সংকট ঘনীভুত করেছে রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। মস্কোর ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার পরিণতি কী হতে পারে তা যাচাইবাছাই না করেই ওয়াশিংটনের একগুয়েমি সিদ্ধান্তের ফল ভোগ করতে হচ্ছে বিশ্বকে।

আইএমএফ এর প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়েরে অলিভিয়ের বলেন, যুদ্ধের কারণে একদিকে কমে গেছে জ্বালানি উত্তোলন। অন্যদিকে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে কমেছে তেল ও গ্যাসের সরবরাহ। যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে ইউরোপেই। আশঙ্কাজনকভাবে কমছে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির হার। ২০২৩ অর্থ বছরে পুরো ইউরোপের প্রবৃদ্ধির হার কমবে ০ দশমিক ৫ শতাংশ।

আর রুশ প্রেসিডেন্টের স্পষ্ট ঘোষণা, মার্কিন কড়াকড়ির কারণেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি ও পণ্য সরবরাহ করতে পারছে না মস্কো। যার পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে ইউরোপকে।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, আমরা তো ইউরোপের সাথে বাণিজ্য করতেই চাই। কিন্তু পশ্চিমারাই তো আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। তাহলে তাদের সাথে ব্যবসাটা কীভাবে করবো? কী করে তাদের পণ্য ও জ্বালানি সরবরাহ করবো? এই নিষেধাজ্ঞার পরিণতি কী ভয়াবহ হয়েছে দেখুন। গাছ কেটে কাঠ পুড়িয়ে শীতকাল পাড়ি দিতে হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোকে। এক্ষেত্রে মস্কোকে কেন দায়ী করা হচ্ছে?

যদিও ওয়াশিংটনের দাবি, মস্কোর ওপর একের পর নিষেধাজ্ঞায় দুর্বল হয়েছে রুশ অর্থনীতি। তবে জ্বালানি উৎপাদনে শীর্ষ এবং ইউরোপের মোট চাহিদার প্রায় অর্ধেক গ্যাস যে দেশ সরবরাহ করে, সেই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে কতটুকু দুর্বল করা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় বিশ্লেষকদের।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply