মনিরুল ইসলাম:
ফেসবুকের মাধ্যমে কোনো অ্যাপ ব্যবহার করলে হ্যাক হয়ে যেতে পারে অ্যাকাউন্ট। শুধু তাই নয়, ব্যবহারকারীর ইউজার নেইম, পাসওয়ার্ড ও অন্যান্য সব তথ্যও চলে যাবে হ্যাকারদের কাছে। এমন ৪০০ অ্যাপ শনাক্ত করেছে খোদ ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। অন্তত ১০ লাখ অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডসহ সব তথ্য চুরি হয়েছে বলেও জানিয়েছে ফেসবুক।
শনাক্ত হওয়া অ্যাপগুলোর তালিকাও প্রকাশ করেছে ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা। অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণে ৩৫৫টি আর আইওএসে ৪৭টি অ্যাপের অধিকাংশই গেমস, ভিপিএন, ফটো এডিটর ও রাশিফল সংক্রান্ত।
প্রযুক্তিবিদরা বলেছেন, ক্ষতিকর এসব অ্যাপ ব্যবহারের আগে সতর্ক হতে। জানার বিষয়, অ্যাপের মাধ্যমে কীভাবে চুরি হয় ফেসবুকের পাসওয়ার্ড ও তথ্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. বি এম মাইনুল হোসেন বলেন, ওইসব অ্যাপে লগ ইন করতে গেলে ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড ইনসার্ট করতে হচ্ছে; ফেসবুকে না কিন্তু। ওই অ্যাপে ইনসার্ট করতে হচ্ছে। তাতে নিজের স্বত্ব হারিয়ে ফেলছেন।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষক তানভীর হাসান জোহা বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, পৃথিবীতে কোনো কিছু বিনামূল্যে নয়। এর বিনিময়ে এক্সেস, পাসওয়ার্ড, জীবন ঘনিষ্ট সংবেদনশীল নথি তারা নেবে। যেগুলো পরবর্তীতে মেশিন লার্নিং এবং এআইয়ের মাধ্যমে গুগলসহ অন্যান্য জায়ান্ট কোম্পানির কাছে ব্যবহৃত বা বিক্রি হয়। এ জাতীয় অ্যাপ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার পেছনে ফেসবুকের কোনো অংশে কম নয়।
এর মানে বড় ধরনের উদ্বেগের খবর ফেসবুক ব্যবহারীকারীদের জন্য। তবে, উদ্বিগ্ন না হয়ে আরও সতর্ক হতে বলছেন বিশ্লেষকরা। অ্যাপ ডাউনলোডের আগে সেগুলো সম্পর্কে জেনে বুঝে ইনস্টলের পরামর্শ তাদের।
ড. বি এম মাইনুল হোসেন বলেন, যে অ্যাপটা ইনস্টল করছি, সেটি কতটা ভ্যালিড বা সিকিউরড তা দেখার বেশ কয়েকটা পদ্ধতি আছে। একটি হচ্ছে ওই অ্যাপের রেপুটেশন; কতজন ডাউনলোড করেছেন, রিভিউ কেমন। চিনি না, জানি না একটি অ্যাপ ইনস্টল করে ফেললাম এবং সেখানে ফেসবুকে লগইনের তথ্য দিয়ে দিলাম; সেটা একেবারেই অনুচিত।
তানভীর হাসান জোহা বলেন, প্রতি তিন মাস পরপর ফেসবুকসহ অন্যান্য ই-মেইলের ক্রিডেন্সিয়ালটা পরিবর্তন করা উচিত। নিরাপত্তা সমস্যা থাকুক আর না থাকুক। নতুন ধরনের আরেকটা বিপর্যয় দেখতে পাচ্ছি, ইদানীং অনেকে ফেসবুকের পাসওয়ার্ডটি মনে রাখে না। যেহেতু একবার লগইন করা থাকে। তারা তাদের অ্যাক্সিস্টিং পাসওয়ার্ডটি ভুলে যায়।
এর আগেও ঝুকিপূর্ণ অ্যাপের তথ্য জানিয়েছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। দুই বছর আগে তখন ২৫টি অ্যাপ শনাক্ত করা হয়। ফেসবুকের অনুরোধে ক্যামেরা দিয়ে ব্যবহার হয়, এমন অনেক অ্যাপ মুছে দেয় গুগল প্লে-স্টোর। সবশেষ শনাক্তকৃত ৪০০ অ্যাপ নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি গুগল ও অ্যাপেল কর্তৃপক্ষ।
/এমএন
Leave a reply