ইরাকের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া কে এই সুদানি?

|

মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি। ছবি: সংগৃহীত

ইরাকের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল লতিফ রশিদ। এর মাধ্যমে দেশটির এক মাসের রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন রশিদ। এরপরই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির নাম ঘোষণা করেন তিনি। খবর আল জাজিরার।

প্রধানমন্ত্রীত্বের জন্য আল-সুদানিকে মনোনয়ন দিয়েছে ইরান সমর্থিত শিয়া কো-অর্ডিনেশন ফ্রেমওয়ার্ক; যে জোটের দখলে এখন দেশটির পার্লামেন্টের সবচেয়ে বেশি আসন। তবে আল-সুদানির এই মনোনয়নকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রভাবশালী শিয়া নেতা মোকতাদা আল সাদর। গত বছরের নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছিল সবচেয়ে বেশি আসন। তবে সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তী সময়ে পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করে তার জোট।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, কে এই মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন আল-সুদানি। ইরান সমর্থিত ইসলামিক দাওয়া পার্টির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আল-সুদানির বাবাকে হত্যা করে প্রেসিডেন্ট সাদ্দামের হোসেনের সরকার। সে সময় আল-সুদানির বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।

সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাতের আশায় ১৯৯১ সালের শিয়া বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন আল-সুদানি। সে সময় সরকারের নির্যাতন থেকে বাঁচতে অন্য দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিল অনেকেই। কিন্তু আল-সুদানি দেশেই অবস্থান করেন। ইরাকভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহানাদ আদনান বলেন, সে সময় যারা ইরাকেই থেকে গিয়েছিল, অন্যদের তুলনায় দেশটির বাস্তবতা সম্পর্কে তাদের বোঝাপড়া তুলনামূলক ভালো। যদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তবে আল-সুদানিই হবেন প্রথম ইরাকি, যিনি ওই পরিস্থিতিতে দেশে ছিলেন।

২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর আগ্রাসনে ইরাকে পতন হয় সাদ্দাম হোসেন সরকারের । এরপর স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন আল-সুদানি। ২০০৪ সালে তিনি আমারাহ শহরের মেয়র হন। পরে নিজের প্রদেশ মায়সানের গভর্নর হন।

এরপর নুরি আল-মালিকি ও হায়দার আল-আবাদির মন্ত্রিসভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পালন করে আল-সুদানি। তিনি ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল নাগাদ শ্রম ও সামাজিক কর্মকাণ্ডবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

ইরাকের রাজনীতিতে পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ২০২০ সালে গণবিক্ষোভ হয়। এরপর দাওয়া পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন আল-সুদানি। তবে ঠিক কোন কারণে আল-সুদানি ইসলামিক দাওয়া পার্টি ছেড়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে অনেকেই বলছেন, দাওয়া পার্টির আদর্শিক অবস্থান পরিবর্তনের চেয়ে নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার প্রলম্বিত করার অভিপ্রায়েই তিনি দাওয়া পার্টি ছেড়েছিলেন।

আরও পড়ুন: বরখাস্ত হলেন ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী, শঙ্কায় ট্রাসের প্রধানমন্ত্রীত্ব

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply