যেভাবে তুরস্কের হাতে যাচ্ছে ইউরোপের জ্বালানির নিয়ন্ত্রণ

|

আস্তানা কনফারেন্সে পুতিন-এরদোগান বৈঠক শেষে তোলা ছবি।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সরব তুরস্ক। এবার আরও একধাপ এগিয়ে ইউরোপে জ্বালানি সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে দেশটি। মস্কোর প্রস্তাবের পর এটা অনেকটাই নিশ্চিত যে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে আঙ্কারা। এর ফলে ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের কেন্দ্রে পরিণত হবে তুরস্ক। এ ইস্যুতে এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে রাশিয়া ও তুরস্কের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থাগুলো।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই জ্বালানি সংকটে ইউরোপ। আসছে শীতে ভয়াবহতা আরও বাড়ার শঙ্কা। এর মাঝেই কাজাখস্তানের আস্তানা কনফারেন্সে পুতিন-এরদোগান বৈঠক দিচ্ছে স্বস্তির বার্তা। এ বৈঠকে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আভাস মিলছিলো আগে থেকেই। তবে এতো তাড়াতাড়ি রুশ প্রেডিডেন্ট পুতিনের তরফ থেকে এমন ঘোষণা আসবে তেমনটি ভাবেননি কেউই। বৈঠকে রাশিয়ার গ্যাস ইউরোপে সরবরাহে তুরস্কের ভূমিকা আরও কীভাবে বাড়ানো যায় সে পরিকল্পনা তুলে ধরেন পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের জন্য আমাদের কাছে সবচেয়ে বিশ্বস্ত তুরস্ক। তাই সেখানে তৈরি হবে আমাদের নতুন গ্যাস হাব। সেখান থেকে প্রয়োজন মতো বিভিন্ন দেশে গ্যাস সরবরাহ করা যাবে। সেসব দেশের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে গ্যাসের দামও নির্ধারণ করা হবে। এরইমধ্যে এর প্রক্রিয়া শুরু করেছি আমরা। এ প্রকল্পে ২০ হাজার কর্মী কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, কৃষ্ণসাগরের নিচ দিয়ে তুরস্ক হয়ে ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে যাবে রাশিয়ার গ্যাস। এটা এখন বলাই যায় যে, ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের নিয়ন্ত্রণ পেতে যাচ্ছে আঙ্কারা। এতে স্পষ্ট যে আঞ্চলিকভাবে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে তুরস্ক। ২০২০ সালে চালু হওয়া তুর্কস্ট্রিম নামে পরিচিত এ পাইপলাইনের মাধ্যমে আগে থেকেই সরবরাহ করা হচ্ছে জ্বালানি। প্রয়োজনে আরও একটি পাইপলাইন তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এরইমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রশাসনকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান বলেন, কিভাবে সবচেয়ে কার্যকর উপায়ে রাশিয়ার গ্যাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো যায় সে বিষয়ে যাচাই-বাছাই শুরু করেছেন আমাদের কর্মকর্তারা। যেখানে সবচেয়ে সুবিধা হবে সেখানেই পাইপ লাইন নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষে রাশিয়া এবং তুরস্কের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান একসাথে কাজ করবে। ভবিষ্যতে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে জ্বালানি সরবরাহের কেন্দ্র হয়ে উঠবে তুরস্ক।

প্রসঙ্গত, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই কৌশলী ভূমিকায় রয়েছে তুরস্ক। আঙ্কারার মধ্যস্ততায় অস্ত্রবিরতি আর শস্য পরিবহনসহ মস্কো-কিয়েভের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে একাধিকবার। তুর্কি প্রেসিডেন্টের কণ্ঠেও প্রতিবারই উঠে এসেছে সংঘাত বন্ধে আলোচনার ইস্যুটি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply