তিন বছরে মশক নিধনের বাজেট বাড়লেও কমেনি মশা

|

মশা মারতে গত তিন বছরে ঢাকার দুই সিটিতে বাজেট বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তবে বাস্তবতা হলো খরচের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মশাও। উত্তর সিটি করপোরেশনের মিরপুর ও উত্তরায় ডেঙ্গু রোগী সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে, নিম্নআয়ের মানুষদের আবাসস্থলে মশার উপদ্রপ সীমাহীন।

উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ফুলবাড়িয়ার একটি রিকশা গ্যারেজে প্রায় শ’খানেক লোকের বাস। নিম্ন আয়ের এসব মানুষকে বসবাস করতে হয় মশার যন্ত্রণা মেনে নিয়েই। ভর দুপুরেও তাই মশারি ছাড়া কোনো উপায় নেই।

সেখানে মশার যন্ত্রণা সহ্য করে থাকেন এমন একজন জানালেন, ঢাকা শহর গরীবদের জন্য একদম হারাম জায়গা হয়ে গেছে। এখানে রাতে যে অবস্থা, দিনেও একই অবস্থা। সারাদিন রিকশা চালিয়ে এসে রাতের যে ঘুম তা তো একদমই হয় না সাথে মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ তো আছেই।

মশা ধনী-গরিব না চিনলেও সিটি করপোরেশন তা ভালোভাবেই চেনে। অভিযোগ আছে, উত্তরার অভিজাত অংশে মশা মারতে দেখা গেলেও নিম্ন আয়ের মানুষরা যেখানে বাস করেন সেখানে মশক নিধন কর্মীরা অনেকটাই যেন অমাবশ্যার চাঁদ।

ডেঙ্গুপ্রবণ আরেক এলাকা মিরপুরেও একই অবস্থা। দরিদ্র অসহায় মানুষকেই যেনো মশার কামড় সহ্য করতে হয় বেশি। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ট এসব মানুষ বলছেন, সমন্বিতভাবে মশক নিধন করা হলে এ পরিস্থিতি হতো না। যদিও সিটি করপোরেশনের দাবি আগের চেয়ে মশক নিধনের কলেবর বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের এলাকায় মশার ওষুধ প্রয়োগে কিছুটা তারতম্যের বিষয় উঠে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের কথাতেই।

ডিএনসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, এতো অলিগলি। সবখানে গিয়ে মশক নিধন খুবই দুরূহ। এরকম বেশ কিছু দুর্গম জায়গা ঢাকা সিটিতেই আছে। আমরা তারপরও চেষ্টা করি ওই জায়গাগুলোতেও পৌঁছানোর।

মিরপুর উত্তরার পরেই ডেঙ্গু রোগী বেশি মুগদায়। এরপরেই ডেঙ্গুর হট স্পট ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়িতে। বাজেটের অর্থ ঠিকঠাক খরচ হলে হটস্পট বলে কিছু থাকতো না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিএনসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান আরও বলেন, যখন মশা বেশি হচ্ছে তখন তারা এর দায় সিতি করপোরেশনের ওপর বর্তাচ্ছেন। আমি কখনই দায়িত্ব এড়াতে চাই না। তবে আমার কথা হলো যে, নাগরিকরা যেনো সচেতন নাগরিক হিসেবে তাদের দায়িত্বটা ঠিকঠাকভাবে পালন করেন।

এবার ডেঙ্গুর ভয়াবহতা অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। তাই শুধু সচেতনতাই নয় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কর্তব্যক্তিদের আরও বেশি সজাগ হতে বললেন ভুক্তভোগীরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ঢাকা উত্তর সিটির মশক নিধনে বাজেট ছিলো ৪৯ কোটি। তিন বছর পর সেটি বেড়ে পৌনে একশ কোটি হলেও কমেনি মশা। তারপরও মশার কামড় থেকে রক্ষা করা যায়নি কোমলমতি শিশু বা কাউকেই। বাজেট বাড়লেও কমেনি মশা, বরং বেড়েছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply