পিতার নাম জানতে ঢাবি অধ্যাপকের বিভাগে প্রক্টরিয়াল টিম!

|

অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দিন খান। সংগৃহীত ছবি।

পিতার নামসহ ব্যক্তিগত তথ্য জানতে বিভাগে গিয়েছেন প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা, বাড়িতে পাঠানো হয়েছে পুলিশ; এমন অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দিন খান। তার দাবি, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ থেকে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ প্রক্টরের অপসারণ দাবির পর প্রতিহিংসার জেরে এ কাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) ড. তানজিমউদ্দিন খান তার ফেসবুকে লেখেন, ‘গতকাল (১৭ অক্টোবর ২০২২, সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যকে শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিয়ে আসি সাড়ে বারোটা-একটা নাগাদ। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ প্রক্টর অফিস থেকে দুজন কর্মচারী আমার বিভাগের অফিসে গিয়ে আমার ব্যক্তিগত ফাইল তল্লাশী করে! আমার স্থায়ী ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য নিয়ে যায়! আমার যাবতীয় তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আছে! সেই তথ্য যোগাড় করতে বিভাগে কেন কর্মচারী গেল আমার ব্যক্তিগত ফাইলের জন্য? কোনো তথ্য দরকার হলে তো রেজিষ্ট্রার ভবনই যথেষ্ট! কোন ক্ষমতাবলে প্রক্টর একজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত ফাইল তল্লাশী করতে তার দুজন কর্মচারীকে আমাদের বিভাগের অফিসে পাঠিয়েছে? তাকে এই এখতিয়ার কে দিলো?’

পরবর্তীতে বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি! সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় আমার স্থায়ী ঠিকানায় একজন এসআই গিয়ে জানায় যে, উনি আমার সম্পর্কে ভেরিফিকেশনের জন্য গেছেন। ওখান থেকে আমাকে ফোন দেওয়া হলে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের একটা তালিকা করা হচ্ছে। সেই জন্য গেছেন! আবার জানালেন, “উনার বস বলতে পারবেন আসল কারণটা কী? সবকিছু মিলিয়ে আমি নিশ্চিত, প্রক্টর তার আত্মমর্যাদাহীন এই ‘মহাকাণ্ডটি’র সাথে আছেন। ঘটনার পরম্পরা তাই নির্দেশ করে!’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী যমুনা নিউজকে বলেন, আমার অফিসের একজন কর্মকর্তা ড. তানজিমের বাবার নাম জানতে বিভাগে গিয়েছিলেন। বিষয়টি আমি জানার পর তার ফোনেই বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলি এবং সেই কর্মকর্তাকে তখনি চলে আসতে বলি। এ নিয়ে পরে শিক্ষক তানজিমউদ্দিন খানের সাথে আমার কথা হয়, শিক্ষক ক্লাবে দেখাও হয়েছে। কোন অভিযোগ থাকলে সেটি আমার অফিসে বসে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে অনুরোধ জানিয়েছি।

বাড়িতে পুলিশ পাঠানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবগত নয়। তিনি বিষয়টি অতিরঞ্জিত করছেন।

হঠাৎ করে কেনো একজন শিক্ষকের পিতার নাম জানার দরকার পড়লো জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, নানা সময় আমাদের নানা তথ্যের দরকার হয়। তথ্য জানতে চাওয়া অপরাধ নয়। তবে বিষয়টি আমার জ্ঞাতসারে ঘটেনি। এর পেছনে অন্য কিছুও নেই।

এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে লিখিতভাবে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. তানজিমউদ্দিন খান। তিনি বলেন, শিক্ষকদের আচরণ শিক্ষকসুলভ হওয়া উচিত। প্রক্টর সেটি করতে আবারও ব্যর্থ হয়েছেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply