গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেও দ্বিতীয় রাউন্ডে জাপান। বৃহস্পতিবার নিজেদের শেষ খেলায় শক্তিশালী পোল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে পরাজিত হয় জাপান। তবে এই পরাজয়ে জাপানের নকআউট পর্বে উঠতে তেমন সমস্যায় পড়তে হয়নি।
তার কারণ গ্রুপের অপর ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেনেগাল ১-০ গোলে হেরে যাওয়া সমীকরণে পিছিয়ে যায় সেনেগাল। আর এই সুযোগে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যায় জাপান।
সেনেগোর মতো তিন খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়েও সমীকরণে এগিয়ে থেকে শেষ ষোলোর খেলা নিশ্চিত করে এশিয়ার দল জাপান। প্রথমার্ধে অসাধারণ খেলেও গোলের দেখে পায়নি কোনো দল। দ্বিতীয়ার্ধে তথা ৫৯ মিনিটে জ্যান বেডনারেকের গোলো এগিয়ে যায় পোল্যান্ড।
এর আগে জাপান-পোল্যান্ড দুইবার মুখোমুখি হয়। তবে সেই দুইবারের দেখায় একক আধিপত্য দেখায় জাপান। তবে বিশ্বকাপের মতো আসরে এই প্রথম মুখোমুখি হয় জাপান-পোল্যান্ড।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে ফুটবল বোদ্ধাদের অনেকেই বলেছিলেন গ্রুপ এইচে থাকা জাপান আন্ডারডগ। অনেকে আবার এমনটিও বলেছিলেন জাপানের জন্য রাশিয়া যাওয়াটা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। খালি হাতেই তারা দেশে ফিরে আসবে। তারা মূলত পোল্যান্ড এবং কলম্বিয়ায়াকেই এগিয়ে রেখেছিলেন।
রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম খেলায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ে শুরু করা জাপান নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সেনেগালের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করে। আগের দুই খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে ছিল।
অপরদিকে একই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে সেনেগালের দরকার ছিল ড্র। আর কলম্বিয়ার প্রয়োজন ছিল জয়। সেই লক্ষ্য স্পর্শ করতে পারেনি সেনেগালিজরা। সাদিও মানেদের বিদায় করে পরের পর্বে উঠেছে কলম্বিয়া। আফ্রিকার ফুটবল পরাশক্তিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে রাদামেল ফ্যালকাওরা। জয়সূচক গোলটি করেন ইয়েরি মিনা।
ম্যাচে আক্রমণাত্মক শুরু করে সেনেগাল। ১৭ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে ওঠে দলটি। তবে ডি বক্সে সাদিও মানেকে ফাউল করে সেই আক্রমণ থামান কলম্বিয়ার রক্ষণসেনারা। এতে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে কলম্বিয়ানরা আবেদন করলে ভিএআরের সহায়তায় তা বাতিল করতে বাধ্য হন রেফারি।
২৫ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পায় কলম্বিয়া। কিন্তু কুয়েন্তেরোর ফ্রি কিক থেকে গোল আদায় করতে পারেননি ফ্যালকাও। ২৭ মিনিটে কাইতার শট রুখে দেন গোলরক্ষক ওস্পানিয়া। এরপর বড় ধরনের ধাক্কা খায় ল্যাতিন আমেরিকার দেশটি। ৩১ মিনিটে ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন দলের প্রধান খেলোয়াড় হামেস রদ্রিগেজ। ৩৭ মিনিটে সানের দুর্দান্ত ফ্রিক একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর আর কোনো আক্রমণ না হলে গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দুদল।
বিরতির পর গোল পেতে মরিয়া আক্রমণ চালায় কলম্বিয়া। মুহুর্মহু আক্রমণে সেনেগালকে ব্যতিব্যস্ত রাখে দলটি। তবে গোলমুখ খুলছিল না। অবশেষে তারা কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায় ৭৫ মিনিটে। আরো একবার ল্যাতিন দলটির নায়ক ইয়েরি মিনা। কুয়েন্তেরোর বাড়ানো ক্রসে দুর্দান্ত হেডে বল ঠিকানায় পাঠান তিনি।
পরে শত চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি সেনেগাল। শেষ পর্যন্ত ১- ০ গোলে হেরে বিশ্বকাপে সলিলসমাধি ঘটে মুসলিম অধ্যুষিত দেশটির।
অপর ম্যাচে পোল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে জাপান। ফলে সেনেগাল-জাপানের পয়েন্ট হয় সমান ৪। হেড টু হেড এবং গোল ব্যবধানও ছিল সমান। তবে ফেয়ার প্লে অনুযায়ী, জাপানিজদের চেয়ে বেশি হলুদ কার্ড পাওয়ায় বিদায় নিতে হলো সেনেগালিজদের।
Leave a reply