ঋণ প্রায় চূড়ান্ত, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বুধবার ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন

|

রিমন রহমান:

আইএমএফের সাড়ে ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ প্রাপ্তি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে সরকার। তাই শেষ সময়ে সার্বিক দিক পর্যালোচনায় বুধবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন। এই সফরের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশে সংস্থাটির মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ। ধারণা করা হচ্ছে, ঋণ পেলে সামনের দিনগুলোতে আর্থিক ক্ষেত্রে স্বস্তি তৈরি হবে। তবে এই জন্য একাধিক শর্ত জুড়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক এই ঋণদাতা সংস্থা।

বৈশ্বিক সংকটে বেশ কয়েক মাস ধরেই বিশ্ববাজারে নাগলের বাইরে জ্বালানী তেলের দাম। পাশাপাশি ভোজ্যতেল, চিনিসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য পণ্যের আমদানি ব্যয়ও এখন আকাশচুম্বি। এমন পরিস্থিতিতে, আমদানি ব্যয় মেটাতে হিমশিম অবস্থা তৈরি হয়েছে, রিজার্ভের মজুদও কমেছে। এ সংকট সামাল দিতে বাংলাদেশের ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাবে সায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণ দাতা সংস্থা আইএমএফ। তাই অর্থনৈতিক অবস্থা খতিয়ে দেখতেই বুধবার দুই সপ্তহের জন্য ঢাকায় আসছেন মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, যাতে আগামী দিনগুলোতে আমদানির কোনো অসুবিধা না হয়, দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম কোনোভাবে যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য এ তহবিল আমাদের প্রয়োজন।

এ নিয়ে আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফের সহায়তায় এবং বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ নিয়ে তিন-চার মাসের মধ্যে যদি স্থিতিশীলতা আনা যায়, সেটি অর্থনীতি ছাড়াও নির্বাচন ও রাজনৈতিকভাবে একটা ভূমিকা রাখবে। যে টাকাটা দেয়া হবে সেটা রিজার্ভে জমা হবে, রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তা করবে, ব্যয় হবে না এটা চাই আমরা। এর সাথে অন্যান্য বাজেট সাপোর্টও পাবে। সেগুলো সরকার ব্যয় করুক। কিন্তু ডলারটা যেন রিজার্ভে থাকে। ফলে আমাদের রিজার্ভ বাড়লে আমরা স্বস্তির জায়গায় আসবো।

তবে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে বরাবরই শর্ত জুড়ে দেয় আন্তর্জাতিক এই ঋণদাতা সংস্থা। বলা হচ্ছে, উন্নতির জন্য এসব সংস্কার জরুরি। ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফ রাজস্ব খাতে সংস্কার চাইবে। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্যই প্রয়োজন ছিল। সংস্কারটা দরকার ছিল বহু আগেই। যা সরকার করেনি বলে আজ এই অবস্থা। তারা আর্থিক খাতে সংস্কার চাইতে পারে। এই খাতে যে ইন্টারেস্ট নির্ধারণ করা আছে সেগুলো তুলে দিতে বলতে পারে। তাছাড়া মানি এক্সচেঞ্জের যে অপারেশনগুলো আমরা করছি, সেখানে তারা সংস্কার করতে বলবে।

মিশনটি অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পদ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, এনবিআর-এর সঙ্গে আলোচনা করবে। ফলে এই ঋণ পেলে দেশের অর্থনীতির ওপর থেকে কালো মেঘ কিছুটা হলেও কাটবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply