পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উত্তেজনা; আসলে কতোটা ভয়ঙ্কর রুশ নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডগুলো?

|

ছবি: সংগৃহীত

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পরামাণু অস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহার। এর মাঝেই, গত বুধবার (২৬ অক্টোবর) বার্ষিক অনুশীলনে বিধ্বংসী এ অস্ত্রের মহড়া নতুন করে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। আগ্রাসনের শুরু থেকেই পশ্চিমারা হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে, ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার উস্কে দিতে পারে ৩য় বিশ্বযুদ্ধকে। রাশিয়ার ভাণ্ডারে আছে প্রায় ছয় হাজার নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড; এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রাশিয়ার এসব অস্ত্র আসলে কতোটা ভয়ঙ্কর?

সাম্প্রদায়িক এক বার্ষিক অনুশীলনে মস্কোর পরমাণু অস্ত্রের মহড়া ছিল অনেকটা চলমান উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢালার মতো। পারমাণবিক বোমার হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ রাশিয়াকে এক্ষেত্রে ঠিক ভরসা করতে পারছে না পশ্চিমা দেশগুলো। যেকোনো সময় পারমাণবিক হামলার আশঙ্কা তাদের।

মস্কোর কাছে রয়েছে বিধ্বংসী সব পারমাণবিক অস্ত্র। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অস্ত্রের হিসাব দেয় না কোনো দেশই। তবে, ফেডারেশন ফর আমেরিকান সায়েন্টিস্টের দাবি, প্রায় ছয় হাজার নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডের মালিক এখন রাশিয়া। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, চীন, ভারতসহ বিশ্বের মাত্র নয়টি দেশের কাছে আছে এসব পারমাণবিক অস্ত্র।

তবে, রাশিয়ার ভাণ্ডারের সব পরমাণু অস্ত্রই কিন্তু ব্যবহার উপযোগী নয়। এরমধ্যে প্রায় দেড় হাজার ওয়ারহেডই এখন মেয়াদ উত্তীর্ণ। আর বাকিগুলোর মধ্যে দেড় হাজার ক্ষেপণাস্ত্র, ও বিভিন্ন সাবমেরিনে মোতায়েন করা হয়েছে। এগুলোই মূলত সক্রিয়। বাদবাকিগুলো মজুত রয়েছে অস্ত্র গুদামে।

ভূমি, সাবমেরিন কিংবা আকাশ তিন জায়গা থেকেই নিক্ষেপযোগ্য নিউক্লিয়ার মিসাইল রয়েছে মস্কোর ভাণ্ডারে। তথ্য বলছে, মোট ১৩ ধরনের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের মালিক মস্কো। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- আর-৩৬এমটু, ইউআর-১০০এন, আরটি-২পিএম ও আরটি-২পিএম২ এর মতো বিধ্বংসী সব ক্ষেপণাস্ত্র। একেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ১০ হাজার থেকে ১৬ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম।

এছাড়া, ২০১৮ সালে অ্যাভেনগার্ড নামের নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ঘোষণা দিয়েছিলেন পুতিন। জানিয়েছিলেন, রাডার ফাঁকি দিয়ে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে আঘাত হানতে সক্ষম এই অস্ত্র। শব্দের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি গতিসম্পন্ন অ্যাভেনগার্ড একাধিক পরমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম।

প্রসঙ্গত, প্রকারভেদে একটি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডে এক হাজার কিলোটন পর্যন্ত বিস্ফোরক থাকে। একটি পারমাণবিক বোমা অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকা পুরোপুরি ধ্বংস করতে সক্ষম, ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন রাখতে পারে আট কিলোমিটার জায়গা পর্যন্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমায় যে বোমাটি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল তাতে বিস্ফোরক ছিলো মাত্র ১৫ কিলোটন।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply