দু’টি পথ খোলা- আত্মহত্যা নয়তো সমন্বিত পদক্ষেপ; জলবায়ু সম্মেলনে গুতেরেস

|

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ছবি: সংগৃহীত

জলবায়ু বিপর্যয়ের মহাসড়কে চলছে বিশ্ব, এবং এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে। ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজনে এমন সতর্কবার্তা দিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। মিসরে জড়ো হওয়া বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন কেবল দু’টি পথ খোলা- আত্মহত্যা নয়তো সমন্বিত পদক্ষেপ।

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ টোয়েন্টি সেভেনে অংশ নিতে মিসরে জড়ো হয়েছেন প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা। তাদের লক্ষ্য, জলবায়ু বিপর্যয় থেকে ধরিত্রীকে রক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের আহ্বান উঠে এসেছে বিশ্বনেতাদের কণ্ঠে। জলবায়ু সম্মেলনের আলোচনায় এবার প্রথমবারের মতো এজেন্ডা হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে ক্ষতিপূরণ তহবিল।

সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে অবধারিতভাবেই উঠে এসেছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব। যুদ্ধের কারণে প্রাধান্যের তালিকা থেকে জলবায়ু সংকট যেন আড়ালে পড়ে না যায়, সে বিষয়ে সতর্ক করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ বৃদ্ধি অব্যাহত, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছেই। পৃথিবী খুব দ্রুত ভয়াবহ বিপর্যয়ের চূড়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখান থেকে ফেরার উপায় থাকবে না। সে পরিস্থিতি এড়াতে জি টোয়েন্টি দেশগুলোকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। দু’টি উপায় আছে, জলবায়ু সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ অথবা আত্মহত্যার চুক্তি।

ছবি: সংগৃহীত

আয়োজক দেশ মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি মনে করিয়ে দেন একের পর এক দুর্যোগের কথা। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনও সতর্ক করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে জলবায়ু রক্ষার অঙ্গীকার ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৫৫ শতাংশ কমিয়ে আনার পরিকল্পনা ইউরোপের। এটা সম্ভব হবে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ালে। কয়লাভিত্তিক অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের মূল পয়েন্ট এটা।

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন চেষ্টার পর অবশেষে কপ টোয়েন্টি সেভেনের এজেন্ডা হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ নামের তহবিল গঠনের বিষয়টি। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সহায়তায় এই তহবিল গঠন নিয়ে আলোচনার পক্ষে ভোট দেন অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, শীত আসছে। অথচ আমার দেশের লাখ লাখ মানুষ মাথার ওপর থেকে ছাদ হারিয়েছে। বন্যায় ৩ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধার, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনে নিজেদের সর্বোচ্চ দেয়া হচ্ছে। এরপরও যে ঘাটতি তা অনেক বড়।

শীর্ষ দূষণকারী দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শিন জিনপিং অংশ নেননি এবারের সম্মেলনে। আর কার্বন নিঃসরণে ২য় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হাজির হবেন চলতি সপ্তাহের শেষে। আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে কপ টোয়েন্টি সেভেন সম্মেলন।

আরও পড়ুন: রাশিয়ার সাথে অস্ত্র বিষয়ক কোনো সম্পর্ক নেই, উত্তর কোরিয়ার দাবি

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply