ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক দুইটি সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত অন্তত ৫০

|

নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর ও নাসিরনগর উপজেলায় পৃথক দুইটি সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। গুরুতর আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এদিকে, অনেকে গ্রেফতারের ভয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহীন জানান, দাঙ্গাবাজদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

জানা যায়, জেলার বাঞ্ছারামপুরে দরিয়াদৌলত ইউপির বাখরনগর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম সমর্থক ও রব্বান মিয়া বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে টেঁটাবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ জন। আহতদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। এর মধ্যে সোহেল রানা (৩৮), রফিক (৩৫) আশ্রাফ (২৫), সালমান (৪০), হেলেনা (৪২), ইমরান (১৮), রাসেল (৩৭), সাইফুল ইসলাম (৪৫), নিপু (৪২) ও সানিকে (১৩) বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। রাসেল মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। অন্যদের নরসিংদী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বহুদিন আগে থেকেই তাদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সোমবার বিকেলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে টেঁটা, দা, ছুরি নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত থেমে সংঘর্ষ চলে।

বাঞ্ছারামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন বর্মন বলেন, কয়েকজন রোগী গুরুতর আহত। তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।

এই ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত (ওসি) নুরে আলম বলেন, যারা এই সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছু টেঁটা উদ্ধার করেছি।

এদিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাওর বেষ্টিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আহতদেরকে নাসিরনগর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোয়ালনগর গ্রামে মেঘনা-ভলভদ্র নদীর তীর থেকে ট্রলি দিয়ে মাটিকাটা নিয়ে নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামের মাসুক মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার রফিক মিয়ার লোকজনের প্রথমে বাদানুবাদ হয়। পরে এ নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। উত্তেজনার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন লাঠি, বল্লম, টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। পরে থেমে থেমে অন্তত তিন ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে উপজেলার চাতলপাড় তদন্ত কেন্দ্রে থেকে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ১৬ জনকে নাসিরনগর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় পাঁচ জনকে ২৫০ শয্যা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. হাবিবুল্লা সরকার বলেন, এই ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ মামলা দায়ের করতে থানায় আসেনি। তবে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এই ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহীন জানান, এসব ঘটনায় জড়িত দাঙ্গাবাজদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply